নিজস্ব প্রতিবেদক।
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় হাসি বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধূ নিখোঁজ হওয়ার ১৫ দিন পর তার মৃতদেহ উদ্ধার করে কবরে দাফন সম্পন করার পাঁচদিন পর তাকে জীবিত উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। এতে চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয় ওই গ্রামে
গত সোমবার (২৫শে সেপ্টেম্বর ২০২৩ইং) ফরিদপুর সদরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে হাসি বেগমকে আটক করে ফরিদপুর সদরপুর থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে নিয়ে আসেন।এর আগে গত(৭ইসেপ্টেম্বর২০২৩ইং)হাসি বেগম নিখোঁজ হন।গত(২০শে সেপ্টেম্বর২০২৩ইং)তার পরিবারের তত্ত্বাবধানে শৌলডুবী কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।হাসি বেগম(২৪) ফরিদপুর সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের শৌলডুবী গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,গত ৮ বছর আগে একই উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বড় বাড়ির মৃত শাহাআলম শেখের ছেলে মোতালেব শেখের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় হাসি বেগমের(২৪) তাদের হুসাইন নামে ৭ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।গত(৭ইসেপ্টেম্বর২০২৩ইং)হাসি বেগম তার শ্বশুরবাড়ি থেকে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কথা বলে সদরপুর আসার উদ্দেশে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ হয়।
এ ঘটনায় হাসির বাবা শেখ হাবিবুর রহমান গত ১১ইসেপ্টেম্বর২০২৩ইং)ফরিদপুর সদরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে তার মেয়ে হাসি বেগমকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে জামাতা মোতালেব শেখ (৪৫)। দুই দিন পর ১৪ইসেপ্টেম্বর২০২৩ইং) হাসি বেগমে (২৪) এর স্বামী মোতালেব শেখ সদরপুর থানায় পাল্টা একটি অভিযোগ দায়ের করেন এবং অভিযোগে উল্লেখ করেন তার স্ত্রী হাসি বেগম নগদ টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে বাবার বাড়িতে পালিয়ে গেছেন।
এদিকে গত ২০ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ইং) সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের আদমপুর এলাকার নাউটানা এলাকায় কচুরিপানার ভেতর থেকে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে ভাঙ্গা থানা পুলিশ।পরে নিখোঁজ হাসি বেগমের মা সালমা বেগম লাশের কোমরে একটি তাবিজ ও পায়ের একটি আঙুল ছোট থাকায় নিখোঁজ হাসি বেগমের লাশ হিসেবে শনাক্ত করলে ময়নাতদন্ত ও আইনগত প্রক্রিয়ার পর শৌলডুবী মদিনাতুল কবরস্থানে দাফন করা হয়।
অপরদিকে,অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ চলা অবস্থায় গত ২৩শে সেপ্টেম্বর হাসি বেগম (২৪)ফোন করে তার বাবা-মাকে জানায় সে জীবিত আছে।সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সদরপুর থানা পুলিশ হাসি বেগমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে জীবিত উদ্ধার করে থানায় জিজ্ঞাবাদের জন্যে নিয়ে আসেন।এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. গফফার শিকদার গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এর আগে জানতে পারি নিখোঁজ হওয়ার পর হাসি বেগমের লাশ পাওয়া গেছে এবং তার পরিবারের লোকজন হাসির লাশও দাফন করেন।হঠাৎ আবার জানতে পারলাম হাসি বেগম মারা যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর সদরপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন আল রশিদ বলেন, হাসি বেগমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।বর্তমানে তিনি থানায় হেফাজতে আছেন। এখনই এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো সম্ভব নয়। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান তিনি।