সাভার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিতে ব্যাংক কলোনী এলাকা থেকে আঁখি নামক এক নারী আসেন।এসময় তিনি সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিকের স্ত্রী পরিচয় দানকারী বলে জানা যায়,চিকিৎসা নিতে আসা আঁখি সবার পরে এসে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে,এতে আগে সিরিয়াল চাওয়ায় বাধা দেন কয়েজন আগে আসা অপেক্ষারত রোগী।এতে অপেক্ষারত রোগীর সাথে একপর্যায়ে কথা-কাটাকাটি হয়,পরে ছাত্রলীগের নেতা আতিকের স্ত্রী পরিচয় দানকারী আঁখি ক্ষিপ্ত হয়ে ওই রোগীকে হাসপালের ভিতরেই মারধর শুরু করেন।ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবার(১৯শে অক্টোবর ২০২৩ইং)সন্ধ্যায় সাভার পৌরসভার থানা স্ট্যান্ডের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চতুর্থ তলায় ঘটে।পরে আঁখির ডাকে সাড়া দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা আতিকের অনুসারীরা হাসপাতালে এসে আরো কয়েকজন সাধারণ রোগী ও তাদের স্বজনদে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে রক্তাক্ত দেখা যায়,যার সিসি টিভির ফুটেজ গণমাধ্যমের হাতে সংরক্ষিত,এ ঘটনায় আহতরা হলেন- মাদ্রাসা শিক্ষক মোশাররফ হোসেন(৪৫),তার স্ত্রী রূপালী বেগম(৪০)ও ছেলে শিবলী আহম্মেদ(২১),এছাড়াও আহত আরেক জনের পরিচয় জানা এখোনও পাওয়া সম্ভব হয়নি।এবিষয়ে বেসরকারি পপুলার ডায়ানষ্টিক সেন্টারের কতৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন করলে তিনি গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেন,প্রতিনিয়ত আমাদের এখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে চিকিৎসার পরামর্শ নিয়ে রোগীর ভির হয়,হঠাৎ করে ছাত্রলীগের নেতা আতিকের স্ত্রী পরিচয় দানকারী এসে বলে আমি ছাত্রলীগ আতিকের স্ত্রী আমাকে আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে,এতে পাশে অপেক্ষারত একজন রোগী তাকে বললেন আমরা অনেকক্ষণ যাবত বসে আছি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে আপনি হঠাৎ করে এসেই নেতার পরিচয় দিয়ে আগে কেনো যেতে চান, একথা শুনে আঁখি একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই নারী রোগীকে এলোপাতাড়ি চড়থাপ্পড় মারতে থাকে,একপর্যায়ে তাকে ফিরাতে গেলে আঁখি তার মুঠোফোনে কল দিয়ে ছাত্রলীগ আতিকের অনুসারীদের খবর দিলে তারা এসে কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই রোগী ও রোগীর সাথে থাকা স্বজনের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়,এতে আহত হন রোগী সহ অন্তত ৪জন।এছাড়াও এঘটনার তদন্তে এসে ঘটনার সত্যতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক(এস আই)মাহমুদুল হাসান।হাসপাতালে থাকা একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীরা সুত্র থেকে জানা যায়,হামলায় শিকার চিকিৎসা নিতে আসা ব্যাংক কলোনী এলাকার এক মাদ্রাসা শিক্ষক।ওই মাদ্রাসা শিক্ষক নিজেও অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে এসেছিলেন বলে জানান তিনি,এবং তার সাথে ছিলেন স্ত্রী ও সন্তান।মুলত আঁখির মারধরে বাধা দেওয়াতেই চড়াও হয় ওই মাদ্রাসা শিক্ষকের উপর।পরে আঁখি নামের ওই নারী সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিককে ফোন দিয়ে লোক পাঠাতে বলেন।এর কিছুক্ষণ পর আতিকের ব্যক্তিগত সহকারি নজরুল ইসলাম ও সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ জামান খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন এসে হাজির হয় পপুলার ডায়ানষ্টিক সেন্টারের চতুর্থ তলায়। আঁখির মুখে এক পাক্ষিক ঘটনা শুনে তার সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ানো ওই রোগীকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন ছাত্রলীগ নেতা আতিকের অনুসারীরা,তবে এর আগেই ওই ব্যক্তি হাসপাতাল ছেড়ে ভয়ে পালিয়ে যান বলে জানা যায়,পরক্ষনে তাকে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে মারধরে বাধা দেয়া দানকারী ওই মাদ্রাসা শিক্ষক ও তার পরিবারের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়,নজরুল ইসলামসহ ১০/১২ একটি দল।মোশাররফ হোসেন একজন মাদ্রাসার শিক্ষক ও ব্যাংক কলোনী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল্লাহর আপন ছোট ভাই। আঁখি ও তার দলবল নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করলে,মাদ্রাসার শিক্ষক তাকে থামতে বলাতে,এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলেন,তুই জানিস না,আঁখি আপা আতিক ভাইয়ের কি.?এই কথা শুনে শিক্ষক মোশাররফ হোসেনের ছেলে শিবলী আহম্মেদ এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করলে তাকে ধাক্কা দিয়ে কিল ঘুষি মারেন নজরুল ইসলাম।এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এলোপাথাড়ি ভাবে শিবলীকে পেটানো শুরু করেন।চোখের সামনে ছেলেকে মারতে দেখে শিবলীর মা রূপালী বেগম এগিয়ে আসার পর তাকেও সজরে ধাক্কা দিলে তিনি ফ্লোরে পরে অজ্ঞান হয়ে পড়েন।খবর পেয়ে হাসপাতালের ম্যানেজার খালেক এসে শিবলী আহমেদকে আহত উদ্ধার করেন।তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।সাভার পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীকে পেটানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন,আমরা ঘটনাটি শুনেছি।অভিযোগ পেয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি স্যারের নির্দেশ পেলেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।এ বিষয়ে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।