নিয়োগ বানিজ্য সহ ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মধ্যযুগীয় কায়দায় শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে যশোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে।গত বুধবার সকালে চেয়ারম্যানের বাড়িতে ডেকে নিয়ে এ নির্যাতন করেন বলে জানা যায়।পর শুক্রবার (১০ই নভেম্বর২০২৩ইং)রাতে বিষয়টি জানাজানি হয়।এদিকে হামলায় শিকার প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নুরুল আমিন জানান,আগামী ডিসেম্বরে যশোর আদর্শ বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হবে।নিয়ম অনুযায়ী কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেন তিনি। বিদ্যালয়টির কয়েক শ গজ দূরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা ফরিদ আহাম্মেদ চৌধুরীর বাড়ি হওয়ায় তিনি জোরপূর্বক সভাপতি হতে চান।কিন্তু তাকে সভাপতির পদ নিশ্চিত না করে নির্বাচন করার উদ্যোগ নেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষককে একাধিকবার ফোন করে ও তার পালিত ক্যাডার পাঠিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা ফরিদ আহাম্মেদ চৌধুরী।এবিষয়ে যশোর আর্দশ বহুমুখী উচ্চ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল আমিন(৫২)আরো বলেন বিদ্যালয়টিতে সম্প্রতি তিনজন কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।এ নিয়োগের আগেই উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী প্রধান শিক্ষককে একাধিকবার ফোন করে হুমকির মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্য বলেন।পরবর্তীতে নিয়োগ হয়ে গেলে উপজেলা চেয়ারম্যান ফোন করে প্রধান শিক্ষককে নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তার বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে নির্দেশ দেন।কিন্তু কর্মচারীরা তার কথা মত সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরীর বাস ভবনে না যাওয়াতে,প্রধান শিক্ষকের উপর ক্ষিপ্ত হন।তিনি একাধিকবার ফোন করে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি তার ক্যাডারদের স্কুলে পাঠিয়ে প্রধান শিক্ষককে হুমকি দেন।এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে গত বুধবার সকাল ১০ঘটিকার দিকে প্রধান শিক্ষকসদর উপজেলা চেয়ারম্যানের মোস্তফা ফরিদ আহাম্মেদ চৌধুরীর বাসভবনে যান।পরে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং তার সাথে থাকা পালিত ক্যাডার বাহিনী মাধ্যমে প্রায় দের ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে শারীরিক নির্যাতন করে।মাথা,ঘাড়,মুখমুন্ডল সহ বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি ভাবে কিল,ঘুষি মারতে থাকে।এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।পরে তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।পরে এ হামলার বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী হামলায় শিকার প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল আমিন(৫০)এবিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।তিনি আরো বলেন যশোর আর্দশ বহুমুখী উচ্চ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ নুরুল আমিন(৫২)এর আগে দু-একবার তার সাথে সাক্ষাৎ করতে এলেও গত বুধবার তাকে ডাকা শর্তেও তিনি আসেননি,এছাড়া তিনি আরও বলেন,স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী স্থানীয় সাংসদ কাজী নাবিল আহমেদ তাকে সভাপতি হিসেবে নিয়োগের জন্য ডিও লেটারও দিয়েছেন।যা প্রধান শিক্ষকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।কিন্তু নিয়োগ বাণিজ্য নির্বিঘ্নে সারতে তিনি সেই ডিও কার্যকর না করে মিথ্যা নাটক সাজিয়েছেন বলে মন্তব্য প্রকাশ করেন।তবে এলাকাবাসী এক ভিডিও সাক্ষাৎকারের তথ্যসূত্র থেকে জানা যায়,সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা ফরিদ আহাম্মেদ চৌধুরী এলাকার এক ত্রাসের জন্ম দিয়েছেন তার অত্যাচারে এলাকার অনেক মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।এছাড়াও এঘটনা নতুন কিছুই নয়,বিগত সময় নিজের ঘরে আগুন লাগিয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যে মামলা দায়ের করে রাজনীতিতে প্রকাশ্য নিজেকে আনেন তিনি,এরপর থেকেই তার সন্ত্রাসীর কর্মকান্ডের সয়লাভ করেন তিনি,যশোর আর্দশ বহুমুখী উচ্চ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল আমিন(৫২)এর উপরে হামলার ঘটনার বিবরনের বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বিচারের দাবীতে একটি গন সাক্ষরকৃত স্বারক পাঠিয়েছেন,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী,মহাপরিচালক(মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা)ও মাননীয় শিক্ষা সচিবের নিকট,এ গন সাক্ষরকৃত স্বারকে উল্লেখিত,যশোর আর্দশ বহুমুখী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের উপর হামলা, রুপদিয়া ওয়েলফেয়ার একাডেমির প্রধান শিক্ষককে লাঞ্চিত,জঙ্গলবাধাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাদিক মিথ্যে মামলা,আয়শা আর্দশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে হুমকিসহ নানান বিষয় তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান তিনি,যার কোনো এখনো প্রতিকার পায়নি এসব মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের সকল হামলায় শিকার শিক্ষকরা।তবে এবিষয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)আব্দুর রাজ্জাককে প্রশ্ন করলে তিনি বিসিএন নিউজ ২৪ কে বলেন,অভিযোগের বিষয়টি তার জানা নেই।আর নির্যাতনের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ এখোনও পাওয়া যায়নি।হামলাকারীদের অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।
চলবে তৃতীয় পর্বে।