মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা দিনে দুপুরে অস্ত্রের মুখে বৃহস্পতিবার(১ই জানুয়ারি২০২৪ইং)ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার কাওয়ালীপাড়া বাজারের কাছ থেকে এক কলেজ ছাত্রীকে অপহরন করেছে।অপহরণ করে বরিশালে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় গোপন তথ্য পেয়ে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ানের সহযোগিতায় ফরিদপুর জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলমের তাৎক্ষণিক তৎপরতায় ফরিদপুর কোতোয়ালী থানাধীন মুন্সিবাজার এলাকায় চুইঝাল হোটেল থেকে দুই অপহরণকারীসহ অপহৃত কলেজ ছাত্রীকে উদ্বার করেছে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানা পুলিশ।এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)সিরাজুল ইসলামের নানা নাটকীয়তার পর ঢাকা জেলা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে অবশেষে পুলিশ অপহরনের মামলা নিয়েছে।মামলা নং ২,তারিখ ০১/০২/২০২৪ ইং।মামলাটি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ধামরাই থানার কুশুরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জব্বার হোসেন খানকে।নারী নির্যাতন দমন আইন ২০০০ইং এর ৭ ও ৩০ ধারায় রুজ্জু হওয়া এই মামলা দায়ের করেছে কলেজ ছাত্রীর বাবা মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বলতলা গ্রামের নিরীহ এক গার্মেন্টস শ্রমিক।মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে যে,অপহরনের শিকার হওয়া মেয়েটি সাটুরিয়া থানাধীন দরগ্রাম সরকারী ভিকু মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজে পড়াশোনা করে। তাকে পাশ্ববর্তী ধামরাই উপজেলার ভাবনহাটি গ্রামের হানিফ আলীর ছেলে কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যাবসায়ী শাহরিয়ার আহমেদ ওরফে কুদ্দুস(২৮)কলেজে আসা যাওয়ার পথে প্রায়শই উত্যক্ত ও বিরক্ত করে আসছিল।বিষয়টি এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের একাধিকবার জানালেও সন্ত্রাসী শাহরিয়ার বাহিনীর ভয়ে কেউ প্রতিকারে এগিয়ে আসতে সাহস করেনি।গতকাল বৃহস্পতিবার কলেজ ছাত্রী তার দাদী এবং ভাইয়ের স্ত্রীর সাথে ধামরাই পৌরসভার কাকরান গ্রামের আত্মীয় বাড়ি থেকে ব্যাটারি রিক্সা থেকে ফেরার পথে বিকেল চারটার সময়ে কাওয়ালীপাড়া বাজারে বিডি:কসমো থাই ফ্যাক্টরীর সামনে পৌছাইলে উক্ত সন্ত্রাসী শাহারিয়ার,তার মূল সহযোগী পাবরাইল গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে কুখ্যাত দেহ ব্যবসায়ী শরিফসহ আরো ৫/৬ জন অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা জোর করে এই কলেজছাত্রী’কে(ঢাকামেট্রো চ-১৯-৫৫৪৮)মাইক্রোবাসে অপহরন করে নিয়ে যায়।এই সময় কাওয়ালী পাড়া গ্রামের সন্ত্রাসী মুরাদ,অর্জুনালাই গ্রামের ফরহাদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি জাকারিয়া পিস্তল উচিয়ে ভয় দেখাচ্ছিল বলে জানা গেছে জানিয়েছে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী। অপহরন করে নিয়ে যাওয়ার সময় মেয়েটি চিৎকার করার চেষ্টা করছে অপহরনকারী এসিড ভর্তি বোতল থেকে এসিড মারার ভয় দেখায় বলে জানা গেছে।বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত পুলিশ কন্সটেবল বোন এবং পুলিশ কন্সটেবল দুলাভাইয়ের সহযোগীতায় গ্রেফতার এড়াতে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে মাইক্রোবাস পরিবর্তন করে আরেকটি প্রাইভেট কারে তুলে বরিশালের দিকে রওনা দেয়ার প্রস্তুতি নেয়ার সময়ে ফরিদপুর জেলার পুলিশ সুপার গোপন তথ্য পেয়ে দ্রুত অভিযানের নির্দেশ দেয়।তাঁর আগে স্থানীয় ডিশ ব্যাবসায়ী শাওনের মাধ্যমে খবর পেয়ে অসহায় মেয়েটিকে অপহরংকারীদের হাতে থেকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান। তাঁরা অপহরণকারীদের চুইঝাল হোটেলে আটকে রাখে পুলিশ না আসা পর্যন্ত।পরে এসপি মোহাম্মদ মোর্শেদ আলমের নির্দেশ পেয়ে এসআই ফাহিম ফয়সালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে।ফরিদপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলমের নির্দেশে কড়া পুলিশ পাহারায় অপহরণকারী শাহরিয়ার,তার মূল সহযোগী শরিফ এবং ভিকটিমকে ধামরাই থানার নিয়ে আসে।আসামিদের আজই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেটারে( ওসিসি)মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।ধামরাই থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছে যে দ্রুতই আসামীদের আদালতে পাচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে।আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন,আগামীকাল ভিক্টিমকে আদালতে প্রেরণ করা হবে জবাববনদী রেকর্ড করানোর জন্য।ঢাকার আদালতে প্রেরণ করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন এস আই জব্বার হোসেন খান।অপহরনের শিকার কলেজ ছাত্রীর অসহায় পরিবার অপহরণে সরাসরি জড়িত সন্তাসী মুরাদ,ও জাকারিয়াসহ বাকি আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার এবং মামলাটি ধামরাই থানা থেকে ডিবি পুলিশের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য স্থানান্তর করার দাবী করেছে।আসামির দুলাভাই প্রভাবশালী পুলিশ সদস্য হওয়ায় ধামরাই থানায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হবে না বলে আশংকা করেছে সে।অপহরণের কাজে ব্যবহার হওয়া মাইক্রোবাস এবং তাঁর চালককেও গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছে প্রভাবশালীরা।