ঢাকার সাভারে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রোডে পাশে গড়ে ওঠা একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ইয়াসমিন ওরফে ঝুনু(৩০)নামক এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।তবে বেঁচে আছে নবজাতক শিশু।গত সোমবার(৮ই এপ্রিল ২০২৪ইং)সন্ধা আনুমানিক সারে ৭ ঘটিকার দিকে থানা রোডের পাশে গড়ে উঠা সেবা ক্লিনিকে প্রসুতি নারীর সিজারিয়ান এর মাধ্যমে অপারেশনের পর এ ঘটনা ঘটে।নিহত নারী মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানার জয়মন্টব ইউনিয়নের চরনয়াডাঙি কাজীপাড়া এলাকার কাজী মোঃ মহিদুর আরাফাতের স্ত্রী এবং ধামরাই উপজেলার চরসঙ্গুর গ্রামের মোঃ তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে ইয়াসমিন ওরফে ঝুনু(৩০)’কে সোমবার(৮ই এপ্রিল ২০২৪ইং)বিকেলে সাভার থানা রোডে গরে উঠা সেবা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সন্ধা আনুমানিক সারে ৭ ঘটিকার দিকে ডা: বিলকিস লায়লা গৃহবধূ ইয়াসমিন ওরফে ঝুনু(৩০)’কে সিজারিয়ান মাধ্যমে অপারেশন করার জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান।কিছুক্ষণ পর তার একটি পুত্রসন্তানের জন্ম হয়।এদিকে মৃত ইয়াছিন ওরফে ঝুনু(৩০)’এর স্বজনদের অভিযোগ,পুত্র সন্তান জন্ম নেওয়ার দীর্ঘ সময় পার হলেও ইয়াসমিন ওরফে ঝুনু(৩০)’কে রহস্যজনক কারণে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করা হচ্ছিল না।অত:পর রাত আনুমানিক ১২ ঘটিকার দিকে দিকে গৃহবধূ ইয়াসমিনকে ওটি থেকে অচেতন অবস্থায় বের করে স্বজনদের না জানিয়ে তড়িঘড়ি করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নতি চিকিৎসার জন্যে নিয়ে যান সেবা ক্লিনিকের কর্মকর্তারা।এনাম মেডিকেলে নেওয়ার পর কৌশলে রোগীর স্বজনদের খবর দিয়ে তাদের মাধ্যমে ইয়াসমিনকে ভর্তি করানো হয়।এ ঘটনার পর পরই হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যান ক্লিনিকটির কর্মকর্তারা।এ ঘটনা জানতে সেবা ক্লিনিকে গেলে স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়।পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সেবা ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি)কাজী মোবারক জানান,এমন কোন ঘটনা ঘটেনি তাছাড়া ইয়াসমিন ওরফে ঝুনু(৩০)নামে কোন প্রসূতি রোগী আমাদের ক্লিনিকে আসেনি।তবে সেবা ক্লিনিকের রিসিপশন থেকে দেলোয়ার হোসেন এবং স্বপন জানান,সেবা ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি)কাজী মোবারকের মাধ্যমে প্রসূতি ইয়াসমিন ওরফে ঝুনুকে গত(৮ই এপ্রিল ২০২৪ইং)তারিখে ভর্তি করা হয়।অবস্থার অবনতি হলে রোগীকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে বুধবার(১০ই এপ্রিল ২০২৪ইং)সকালে ওই রোগীর মৃত্যু হয়।সেবা ক্লিনিকের কর্মচারীদের এত সুনামের পর এ ব্যাপারে ডা:বিলকিস লায়লার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিকদের পরিচয় পেয়েই তিনি কলটি কেটে দেন।এরপর একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে আর ফোনে পাওয়া সম্ভব হয়নি।সেবা ক্লিনিকের আশেপাশে খোঁজ নিয়ে জানা যায়,এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ)প্রধান ডা:রেজাউল হকের তত্ত্বাবধানে আইসিইউর ১৪নং বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইয়াসমিন ওরফে ঝুনু(৩০)এর মৃত্যু হয়।এছাড়াও এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তথ্যসূত্র থেকে জানা যায়,সেবা ক্লিনিকে ভুল সিজারিয়ান অপারেশনের পর ইয়াসমিনের অবস্থার অবনতি হয়।অতিরিক্ত ক্রাইসিস সময়ে এনাম মেডিকেলে তাকে আনা হয়।ভর্তির আগেই রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল বলে জানান তিনি।বিষয়টি দায়িত্বরত চিকিৎসকরা স্বজনদের জানিয়েই লিখিত নিয়ে সোমবার গভীর রাতে রোগীকে ভর্তি নেয়।বুধবার সকালে রোগীর মৃত্যু হয়।প্রাথমিকভাবে বলা যায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে ইয়াসমিন অরফে ঝুনুর মৃত্যু হয়েছে।তবে ভুল চিকিৎসায় হয়েছে কিনা তদন্ত করলে বিস্তারিত জানা যাবে।রোগীর স্বজন রুবেল মিয়া অভিযোগ করে বলেন,সেবা ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)কাজী মোবারক একসময় ছিলেন রোগীর দালাল।তার জড়াজড়িতেই ওই হাসপাতালে ইয়াসমিনকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আমরা জানতে পারি তিনি ওই হাসপাতালে একটি শেয়ার কিনে মালিক হয়েছেন।আমরা পারিবারিকভাবে আলোচনার পর কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিব।এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.সায়েমুল হুদার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন এছাড়াও রোগীর স্বজনদের অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।