ঢাকার সাভারে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে ফার্নিচার দোকানের রংমিস্ত্রি সাজ্জাদ হোসেন(২২)হত্যা মামলার প্রধান আসামী আলামিন ওরফে ক্রিম আলামিনকে গ্রেফতার করেছেন সাভার মডেল থানার পুলিশ।গত রোববার রাতে বিশেষ এক অভিযান চালিয়ে গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা যায়।এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো সুইস গিয়ার উদ্ধার করে পুলিশ।আলামিন দীর্ঘদিন যাবত ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত থেকে অবৈধ উপায়ে সাভারের শপিং কমপ্লেক্স গুলোতে কসমেটিকসের দোকানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ক্রিম সাপ্লাই দিয়ে আসছিল।এর আগে গতশুক্রবার(১২ই এপ্রিল ২০২৪ইং)রাত আনুমানিক ১১ঘটিকার সময়র দিকে সাভার পৌরসভার বক্তারপুর আড়াপাড়া-কোটবাড়ি বালির মাঠে পেশাদার অপরাধীদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় সাজ্জাদ হোসেন(২২)।পরদিন নিহতের বাবা শাহিনুর ইসলাম শাহীন ওরফে নুরা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় কয়েজনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।এমামলার উল্লেখিত আসামিরা হলেন,কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার টাংগের বাজার বাগুয়ান গ্রামের জালাল বাবুর্চির ছেলে মোঃ আলামিন ওরফে ক্রিম আলামিন (১৯),সাভার পৌরসভার সবুজবাগ এলাকার সরোয়ার হোসেন ভান্ডারীর ছেলে মোঃ স্বপন ওরফে দস্যু স্বপন(২৮),কোটবাড়ী এলাকার সাজু হোসেনের ছেলে মোঃ রাব্বি ওরফে মুরগি রাব্বি(১৯)ও মোঃ ইয়াছিন(২০)।এছাড়াও অজ্ঞাত আরো ৩ জনকে মামলার আসামী করা হয়েছে।এদের মধ্যে সাভার মডেল থানাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় দস্যু স্বপনের বিরুদ্ধে আরো ৫ টি মামলার তথ্য দিয়েছেন সাভার মডেল থানার পুলিশ।
সোমবার(১৫ই এপ্রিল ২০২৪ইং)দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও ট্রাফিক উত্তর বিভাগ)আব্দুল্লাহিল কাফী,পিপিএম(বার)।এ সময় ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সাভার সার্কেল)শাহিদুল ইসলাম,সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মোহাম্মদ শাহ্জামান পিপিএম,সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক(অপারেশন)নয়ন কারকুন ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।সাভার মডেল থানার পুলিশ জানায়,নিহত সাজ্জাদ হোসেন(২২)সাভার পৌরসভার আরাপাড়া এলাকার কফিল উদ্দিনের বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে সাভার উপজেলার হেমায়েতপুর এলাকায় একটি ফার্নিচারের দোকানে রংমিস্ত্রির কাজ করতেন।(১২ই এপ্রিল ২০২৪ইং)রাত ৯ঘটিকার দিকে সাভার পৌরসভার বক্তারপুর আড়াপাড়া-কোটবাড়ি বালির মাঠ এলাকায় নিহত সাজ্জাদ হোসেন(২২)তার বন্ধু আলামিন,আলহাজ,পারভেজ,রায়হান,মাসুদ,বাপ্পীমিয়া সহ স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে গল্প করছিল।তাদের পাশ দিয়ে আলামিন ওরফে ক্রিম আলামিন তার সহযোগী রাব্বি ওরফে মুরগি রাব্বিসহ রিক্সাযোগে যাচ্ছিল।তারা সাজ্জাদ সঙ্গীদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে।এ সময় ওই দুজনের কাছে একটি ছুরি পাওয়া গেলে নিহত সাজ্জাদ সঙ্গীয়দের কাছে ক্ষমা চেয়ে আলামিন ও রাব্বি ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।এর ঠিক একব্ল থেকে দেড় ঘন্টা পর ওই এলাকার পেশাদার অপরাধী দস্যু স্বপনের নেতৃত্বে পুনরায় ক্রিম আলামিন,মুরগি রাব্বি,ইয়াছিনসহ আরো অজ্ঞাত ২/৩ জন ঘটনাস্থলে আসে।এরপর কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাজ্জাদকে ধারালো সুইচ গিয়ার দিয়ে পেটে বুকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে তারা সবাই পালিয়ে যায়।পরে স্থানীয় এলাকাবাসী সহায়তায় রক্তাক্ত অবস্থায় দ্রুত উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।জানা গেছে,নিহত সাজ্জাদ হোসেন(২২)রাজাশন এলাকার আনোয়ার হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া রফিকুল ইসলামের মেয়ে ফাতেমা আক্তারকে(২১)ছয় বছর আগে বিয়ে করেন।তাদের সংসারে সিদরাতুল মুনতাহা সাফা(৫)নামে বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।নিহতের শ্বশুরবাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব থানার অলিপুর গ্রামে।পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীর সঙ্গ ত্যাগ করে ২ বছর যাবত পূর্ব পরিচিত বড় ভাই ইলেকট্রিক মিস্ত্রি বাপ্পী মিয়ার আশ্রয়ে ওই ভাড়া বাসায় আলাদা একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকতেন তিনি।নিহত সাজ্জাদ হোসেন কাজের পাশাপাশি বাপ্পী মিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন সময় পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রেদোয়ান মোল্লার অনুসারী হিসেবে নিয়মিত রাজনৈতিক প্রোগ্রামে অংশ গ্রহন করতেন।সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মোহাম্মদ শাহ্জামান পিপিএম জানান,এজাহার নামীয় বাকি আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।