২৬শে জুন ২০১৯ইং সালে বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদন শুনানির জন্য হাইকোর্টে জমা দিয়েছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী।এদিকে হাইকোর্ট বিচারপতি মোঃ রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানা যায়।রোববার(২১শে এপ্রিল ২০২৪ইং)আইনজীবী মোঃ শাহীনুজ্জামান জানান,জামিন আবেদনের শুনানির জন্য মেনশন স্লিপ জমা দেওয়া হয়েছে।এখন যেদিন আবেদনটি কার্যতালিকায় আসবে সেদিন শুনানি হবে।এর আগে খালাস চেয়ে আপিল এবং জেল আপিল করেছিলেন মিন্নি। ২০২০ইং সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ আছাদুজ্জামান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।এ রায়ে প্রাপ্ত বয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। পাশাপাশি ছয় আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার দণ্ডেও দণ্ডিত করেন।বাকি ৪ জনকে খালাস দেওয়া হয়।পরে নিয়ম অনুসারে একই বছরের ৪ই অক্টোবর ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পৌঁছে।পাশাপাশি ৬ই অক্টোবর মিন্নিসহ অন্য আসামিরা আপিল করে।এ আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় মিন্নি এর আগেও জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন।আদালত তার আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাতিল ঘষোনা করেছিলেন।বরগুনার আলোচিত রিফাত শরিফ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন,মোঃ রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী,আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বী আকন,মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত,রেজোয়ান আলী খাঁন হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়,মোঃ হাসান ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।এ হত্যা মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন,মোঃ মুসা(পলাতক),রাফিউল ইসলাম রাব্বি,মোঃ সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন।২০১৯ইং সালের ২৬ই জুন সকাল সাড়ে ১০ঘটিকার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডের ক্যালিক্স একাডেমির সামনে স্ত্রী মিন্নির সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর সহযোগীরা।গুরুতর অবস্থায় রিফাত শরীফকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত মারা যান।এরপর রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ডকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও পাঁচ থেকে ছয়জনের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।এ মামলায় প্রথমে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করেছিলেন নিহত রিফাতের বাবা।
পরে ২ই জুলাই ভোরে জেলা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে প্রধান আসামি নয়ন বন্ড(২৫)নিহত হন। হত্যাকাণ্ডের ২০ দিন পর ওই বছরের ১৬ই জুলাই মিন্নিকে তার বাবার বাসা থেকে বরগুনা পুলিশ লাইনে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ হত্যায় তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মনে হওয়ায় ওইদিন রাতেই মিন্নিকে গ্রেপ্তার দেখায় বরগুনা থানা পুলিশ।পরে একই বছরের ২৯শে আগস্ট হাইকোর্ট মিন্নিকে জামিন দেন।১লা সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক,দুইভাগে বিভক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪জন রয়েছেন।২০২০ইং সালের ১ই জানুয়ারি প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়।পরে সাক্ষ্য গ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে ৩০শে সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করা হয়।অপরদিকে বিচার শেষে ২০২০ইং সালের ২৭শে অক্টোবর অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনের বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা নারী ও শিশু আদালতের বিচারক মোঃ হাফিজুর রহমান।এ রায়ে ছয়জনকে ১০বছরের কারাদণ্ড,চারজনকে পাঁচ বছর এবং একজনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন।বাকি তিনজনকে খালাস দেন বরগুনা জেলা দায়রা জজ আদালত।