ঢাকার সাভারে আল হেরা স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামক বেসরকাতরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফিস কক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানেরত চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান(৫০)ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছেন সাভার মডেল থানার পুলিশ।শুক্রবার(৫ই জুলাই ২০২৪ইং)বিকেল আনুমানিক ৪ ঘটিকার দিকে সাভার পৌরসভার উত্তর রাজাশন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।নিহত অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান সাভারের উত্তর রাজাশন এলাকার মো: শামসুদ্দিনের ছেলে এবং আলহেরা স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।এই ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় তথ্য সুত্রে জানা যায়,বিকেলে আল হেরা স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান(৫০)অফিস কক্ষে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে জড়ো হন স্থানীয় এলাকাবাসী।তখন তারা দেখতে পান মরদেহটি নিহতের পরিবারের সদস্যরা নামিয়ে অফিস কক্ষের বাড়ান্দার মেঝেতে এনে শুইয়ে রেখেছেন।পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। তবে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা এ নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে এলাকার স্থানীয় সচেতন মানুষের মাঝে।এব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহতের এক প্রতিবেশী জানান,শফিকুর রহমানের সাথে দীর্ঘদিন যাবত তার স্ত্রী মৌসুমীর পারিবারিক কলহ চলে আসছিল।অধ্যক্ষ শফিকুর রহমানের বৃদ্ধ বাবা-মাকে সহ্য করতে পারত না তার স্ত্রী মৌসুমী প্রায় সময়ই ব্ল্যাকমেইলিং করে স্বামীর সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে স্ত্রী মৌসুমির বিরুদ্ধে,এছাড়া তিনি আরো জানান,নিহত শফিকুর রহমানের মেয়ে সাফার সঙ্গে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের এক যুবকের প্রেমের সম্পর্কেরও গুঞ্জন রয়েছে এলাকায়।প্রায় সময় সাফা প্রেমিকের সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে সময় কাটাতেন যা সাফার বাবা অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারতেন না।তাছাড়া এ নিয়ে অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাধা দিলে একাধিকবার তিনি স্ত্রী ও মেয়ের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন।এছাড়াও কিছুদিন আগে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যায় সাফা। অধ্যক্ষের স্ত্রী মৌসুমির মধ্যস্থতায় পারিবারিকভাবে বিয়ে মেনে নেওয়ার শর্তে ফিরে আসে অধ্যক্ষের মেয়ে সাফা।কয়েকদিন যাবত বাবাকে বিয়ের ব্যাপারে চাপ দিয়ে আসছিল সাফা।বিধর্মীর সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে পুনরায় অস্বীকৃতি জানালে অধ্যক্ষ এবং তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।এদিকে অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থল আলহেরা স্কুল এন্ড কলেজের ভবনে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দিয়ে লাঞ্ছিত করেন নিহত শফিকুর রহমানের স্ত্রী মৌসুমি,মেয়ে সাফা ও তাঁর একদল সহযোগী।অভিযুক্ত সাফা ও তার সহযোগীদের ধাক্কায় আহত হয়েছেন আনন্দ টিভির সাভার প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল।তাকে লাঞ্ছিত করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।তবে সাংবাদিক প্রবেশে বাধা ও লাঞ্ছিতের ঘটনায় নিন্দা ও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।ঘটনার শিকার সাংবাদিক ইব্রাহিম খলিল জানান,শফিকুর রহমান অত্যন্ত ভালো লোক ছিলেন।তার মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গেলে নিহতের মেয়ে সাফা ও তার সহযোগীদের বাধার মুখে পড়ি।এক পর্যায়ে আমিসহ আমার সাথে অন্যান্য সাংবাদিকদেরকে লাঞ্ছিত করা হয়।যদি শফিকুর রহমান আত্মহত্যা করে থাকেন তাহলে কেন তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় রাখা হলো না.?এমনকি নিচে নামিয়ে কেন হাসপাতালে নেওয়া হল না.?এমন প্রশ্ন করলে পরতে হয় তপের মুখে।এঘটনার অভিযোগের ব্যাপারে নিহতের স্ত্রী ও মেয়ের কাছে জানতে চাইলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যান।এদিকে এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই)রাজিব সিকদার বলেন,খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।প্রাথমিক সুরতহাল শেষে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।তাছাড়া গণমাধ্যমের এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন,প্রাথমিকভাবে তাদের পারিবারিক কলহের বিষয়টি উঠে এসেছে।তবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা বিষয়টি ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।যদি তিনি হত্যার শিকার হন তাহলে অপমৃত্যুর মামলা হত্যা মামলা হিসেবে গৃহীত হবে বলে জানান তিনি।