সাভার থানাধীন উত্তর রাজাশন চুরির অপবাদ দিয়ে শিশু গৃহকর্মী মিম(১০)’কে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে অত্যাচারসহ অমানবিক নির্যাতনের মামলায় গ্রেপ্তার দম্পতি বরগুনা থানা সাস্থ্য কমপ্লেক্স আবাসিক ডা: কাজী ইসমাইল হোসেন(৩২) ও মোছাঃ মাহমুদা খাতুন পরশ মনির(২৪)সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে সাভার মডেল থানা পুলিশ।সাভার থানার পুলিশ সুত্রে জানা যায় গৃহপরিচারিকা নির্যাতনের মামলায় গ্রেপ্তারকৃত মনি(২৪)’কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত,অপর আসামি ডা: ইসমাইল হোসেন(৩২)’কে জেলেহাজতে পাঠানো হয়েছে রোববার(১৪ই জুলাই২০২৪ইং)বিকেল ৫ঘটিকার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই)হাসান সিকদার।এর আগে সকালে সংশ্লিষ্ট মামলার দুই আসামিকে আদালতে তোলা হয়।এদিকে গৃহকর্মী মিম(১০)নির্যাতন মামলার আসামি কাজী ডা: ইসমাইল হোসেন মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার ঘরিয়ালা কাজীপাড়া গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে ও মোছাঃ মাহমুদা খাতুন পরশ মনি একই এলাকার নাজিমুদ্দিন সরকারের মেয়ে বলে জানা যায়,তারা সাভার পৌর এলাকার উত্তর রাজাশন বসবাস করতেন।গৃহকর্মী মিম(১০)তাদের বাসায় কাজ করতেন বছর খানেক।গত এক বছর ধরে তাকে(মিম)’কে মধ্যযুগীয় কায়দায় ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে অত্যাচারসহ অমানবিক নির্যাতন করতেন এ দম্পতি।মিমের বাড়ি সাভারের রাজাশন এলাকায়।বাবার নাম আনোয়ার হোসেন।মনির মায়ের মধ্যস্থতায় মিমকে ১ হাজার টাকা বেতনে গৃহকর্মীর কাজে নেওয়া হয়েছিল।সাভার মডেল থানার মামলার এজাহার থেকে জানা যায়,কাজী ডা: ইসমাইল ও তার স্ত্রী মাহমুদা খাতুন পরশ মনি ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের প্রতিবেশী।এই সুবাদে তারা একে অপরের পরিচিত।প্রায় দেড় বছর আগে আসামি মাহমুদা খাতুন পরশ মনির মায়ের মধ্যস্থতায় মিমকে ১ হাজার টাকা বেতনে কাজে নেওয়া হয়।গত ১ বছর কাজ করার পরও মিম(১০)’কে ঠিকঠাক বেতন দেওয়া হতো না। বরংচ তাকে বিভিন্ন সময় শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন দাম্পত্য আসামিরা।এছাড়াও বেতনের টাকা চাইলে শিশু মিমকে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে অমানবিক নির্যাতন করেন অভিযুক্তরা। নির্যাতনের বিষয়টি মিমের পরিবার যাতে না জানতে পারে সে জন্য তারা যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। গত শুক্রবার ভুক্তভোগী অসুস্থ হয়ে পড়লে তার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করেন ইসমাইল-মনি দম্পতি।একইসঙ্গে ভয়ভীতি দেখান।মিমকে সাভার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে থানায় মামলা দায়ের করেন তার বাবা মা।এদিকে মিমের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতে এই মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা হয় অভিযুক্ত আসামী ইসমাইল-মনি দম্পতিকে।বিচারক মনির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন,,অপর অভিযুক্ত আসামী ডা: কাজি ইসমাইল’কে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।এদিকে ভুক্তভোগী মিম(১০)’এর কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী মিম জানান,আমি ওই বাসায় প্রায় ১ বছর ধরে গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োজিত ছিলাম।ওই বাসায় যাওয়ার পর প্রথম কয়েকদিন আমাকে আদর করেছে।কিন্তু কিছুদিন যাওয়ার পরই আমাকে কোনো কারন ছাড়াই মারধর করতে থাকে।সর্বশেষ আমাকে চুরির অপবাদ দিয়ে ছোট ফল কাটার ছুরি দিয়ে সারা শরীরে খুঁচিয়ে নির্যাতন করেছে।এছাড়া ব্যাট দিয়ে পায়ে ও মাথায় আঘাত করেছে।আমার সারা শরীরে নির্যাতনের দাগ ও জখমও রয়েছে।পরে আমি গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পরলে আমার মা’কে তারা(ইসমাইল)ফোন করে বাসায় আনে,পরে আমার মা আমার শরিরে আগাতের চিহ্ন দেখে তাদের কে জিজ্ঞাসা করলে তারা(ইসমাইল-মনি)আমার মা’কে ভয়ভীতি দেখায় এমন কি আমাকে মেরে ফেলার হুমকিও প্রধান করেন।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই)মো: হাসান সিকদারের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এ ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের পরপরই অভিযুক্তদের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।পরে ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী পরিবার। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছিল অভিযুক্ত আসামী ইসমাইল-মনি’কে পরে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে আসামী মনি(২৪)’কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয় বলে জানান তিনি।