সারাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সহিংসতা চলাকালীন রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে হেলিকপ্টার থেকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে।এছাড়াও হেলিকপ্টার কোনো ধরনের গুলি করা হয়নি বা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি বলে দাবী জানিয়েছে র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন(র্যাব)।বৃহস্পতিবার(২৫শে জুলাই ২০২৪ইং)রাতে র্যাব সদর দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক লিখিত বার্তায় এসব কথা বলা হয়।র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন(র্যাবে’র)গণমাধ্যমের পাঠানো এ বার্তায় আরো বলা হয়েছে,সারাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল ও সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা গত(১৮ই জুলাই ২০২৪ইং)সারা দেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কেন্দ্র করে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে।এ শাটডাউন’কে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালীন কতিপয় দুষ্কৃতকারী ও স্বার্থান্বেষী একটি মহল রাজধানীসহ সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে হামলা,অগ্নিসংযোগ,সংঘর্ষ ও নাশকতার মাধ্যমে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি এবং সরকারি ও জনগণের সম্পত্তির ক্ষতি সাধন করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টা চালিয়েছে।এছাড়াও রাষ্ট্রবিরোধী দুষ্কৃতকারী ও সন্ত্রাসী চক্র পরিকল্পিতভাবে বিটিভি ভবন,মেট্রোরেল,এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে,হানিফ ফ্লাইওভার,সেতু ভবন,ডাটা সেন্টার,বিআরটিএ ভবন এবং পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনাসহ সরকারি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও যানবাহনে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।তবে সাধারণ শিক্ষার্থী ও দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষার্থে এবং দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব ফোর্সেস রাজধানীসহ সারাদেশে টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে আসছে।এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে দায়িত্ব পালনকারী সহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর দুষ্কৃতকারী ও নাশকতাকারীরা উদ্দেশ্যমুলক রাজধানীসহ সারদেশের বিভিন্ন স্থানে মধ্যযুগীয় কায়দায় অতর্কিত হামলাসহ ভাংচুর অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে।ওই হামলা ও আক্রমণে শতাধিক র্যাব সদস্য আহত হন।এদিকে র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন(র্যাব)তাদের পাঠানো বার্তায় আরও জানান,সহিংসতা ও নাশকতার সময় দুর্বৃত্তরা কোমলমতি শিশু-কিশোরদের আত্মরক্ষার ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে রাস্তা অবরোধ করে এবং ধ্বংসযজ্ঞ প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।কোমলমতি শিশু-কিশোররা সামনে থাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ বল প্রয়োগ থেকে বিরত থাকে।নিরুপায় হয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চলাচলের পথ সুগম করার জন্য এবং দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে জনগণের জানমালের ক্ষতি সাধন ও ধ্বংসযজ্ঞ প্রতিরোধে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়।এক্ষেত্রে হেলিকপ্টার থেকে কোনো প্রকার গুলি করা হয়নি বা কোনো আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি।এছাড়া রাজধানীর বাড্ডা ও নারায়ণগঞ্জের শিমরাইলে দুর্বৃত্তরা হামলা ও আক্রমণ করে সাধারণ জনগণ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবরুদ্ধ করে ভবনে অগ্নিসংযোগ করে।তবে গত(১৮ই জুলাই ২০২৪ইং)আন্দোলনকারীদের আক্রমণের শিকার হয়ে আটকে পড়া ডিএমপি’র সদস্যরা কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির ছাদে অবস্থান নিলে ৬১ জন পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে র্যাবে’র হেলিকপ্টারভ গত(২০শে জুলাই২০২৪ইং)নারায়ণগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় দুর্বৃত্তরা মা ও শিশু হাসপাতাল ভবনের নিচে অগ্নিসংযোগ করলে ওই ভবনের বাসিন্দা ও হাইওয়ে পুলিশ সদস্য ছাদে অবরুদ্ধ হয়। ওই সময় ভবনের নিচে ৩ জন শ্রমিক অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে।ভবনের ছাদে অবরুদ্ধরা র্যাবের সহায়তা চাইলে ওই হাসপাতালের কর্মচারীসহ ৩৬ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে র্যাব ফোর্সেসের হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে আনা হয়।এদিকে আকাশ পথে র্যাবের হেলিকপ্টার টহল ও উদ্ধারসহ সকল কার্যক্রমের ভিডিও চিত্র র্যাব কর্তৃক ধারণ করা হয়েছে,যা ইতোমধ্যে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম,র্যাবের ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারও করা হয়েছে।র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন র্যাবে’রপাঠানো বার্তায় আরও বলা হয়,বাংলাদেশের জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ,সরকারি স্থাপনা রক্ষা এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও মানবাধিকার সুনিশ্চিত করতে র্যাবের সকল সদস্য বদ্ধপরিকর।আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও দেশব্যাপী নিরাপত্তা নিশ্চয়নে র্যাবের টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে এবং থাকবে বলে জানানো হয়।