1. info@www.bcnnews24.com : BCN NEWS 24 :
শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১০:১৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
নির্ধারিত ছয় মাসের সময় পার হলেও,এখনো সড়কে চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন। সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি(এনসিপি)। সাভারে ৩১ দফা বাস্তবায়নে সচেতনতামূলক প্রচারণায় সাভার পৌর ছাত্রদল। সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ জারি। সাভার বিরুলিয়ায় অবৈধ হাউজিং কোম্পানি রেলিক সিটি ও ভুমিদস্যু নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। সাভারে লোকালয়ে প্রকাশ্যে মাথায় গুলি করে যুবকে হত্যা। সাভারে ঢালাই স্পেশাল সিমেন্টের আয়োজনে বাড়ি নির্মাণে সচেতনতা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত। সাভারে ইলেকট্রিশিয়ান ফেডারেশনের সভা অনুষ্ঠিত। প্রশাসন’কে মেনেজ করেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবাধে চলছে ফিটনেস বিহীন যানবাহন। দেশে নানা আয়োজনে মাধ্যমে উদযাপিত হচ্ছে বুদ্ধ পূর্ণিমা।

সারাদেশে গনহারে মামলা বাদ পরেনি সাভার ও আশুলিয়া অবিচারের শঙ্কা,মামলা বাণিজ্যে লক্ষ্য প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীরা।

বিসিএন নিউজ ডেস্ক।
  • প্রকাশিত: বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৬৭ বার পড়া হয়েছে

বিসিএন ডেস্ক:
সারাদেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনের সময় হতাহতের ঘটনায় গনহারে মামলা করে তদন্ত ছাড়াই আসামি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।এরই মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ কয়েকটি চক্র মেতেছে মামলা বাণিজ্যে।এছাড়াও তাদের লক্ষ্য প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কর্ণধাররা।মামলায় আসামি না করার জন্য ব্যবসায়ীদের কাছে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের অর্থ।তবে দাবি করা মোটা অংকের টাকা না দিলেই দেওয়া হচ্ছে একের পর এক মিথ্যে মামলা,করা হচ্ছে হত্যা মামলার আসামী শুধু ব্যবসায়ীই নয়,এসব মিথ্যে হয়রানি মূলক মামলা থেকে বাদ যাচ্ছেন না শিক্ষক,সাংবাদিক,সাধারণ মানুষসহ তারকারাও।
সরজমিনের তথ্যসূত্র থেকে জানা যায়,রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল ও পূর্বশত্রুতার জেরে মামলার আসামি করারও অভিযোগ পাওয়া যায়।অনেক ক্ষেত্রে মামলার বাদী চেনেন না আসামিকে আর আসামিও চেনেন না বাদীকে।বিশেষ করে ঢাকা জেলার সাভার-আশুলিয়া-ধামরাই ও ঢাকার বাইরের জেলার শত শত মানুষ’কে মামলার আসামী করা হচ্ছে এসব মামলায়।এ ধরনের প্রশ্নবিদ্ধ মামলা প্রকৃত ভুক্তভোগীদের সঠিক বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের বাইরে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে বলে মনে করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা।এসব মামলা সংক্রান্ত তথ্য জানতে ঢাকা আইনজীবী সমিতির একজন আইনজীবী নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক,তিনি বলেন,সারাদেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে হতাহতের পুজি করে রাজনৈতিক দলসহ একটি চক্র এইসব মামলা বানিজ্য নিয়ে ব্যাস্ত থাকতে দেখা যায়,শুধু তা-ই নয় ঢাকা জেলাসহ এমনকি ঢাকার বাইরের ঘটনায় রাজশাহী,রংপুর আর লালমনিরহাট থেকে ১০০-১৫০ মানুষ আসামি হবে,তখন খুব সহজেই অনুমান করা যায় এগুলো বানোয়াট মামলা।এগুলো শুধু হেনস্তার জন্য করা হয়েছে।রংপুর থেকে ১০০ জন মানুষ ঢাকায় এসে একজনকে খুন করবে না।যেখানে লোক মারা গেছে পুলিশের গুলিতে।এগুলো স্ক্রিপ্টেড (সাজানো)।কেউ একজন লিখে দিচ্ছে,সেগুলো থানায় থানায় চলছে।ব্যবসায়ীরাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।এক নম্বর আসামি শেখ হাসিনা,দুই নম্বর আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং এরপর অমুক এলাকার ২০০ লোক! এগুলো কিছু হলো!এ ধরনের মামলাগুলো করাই হয় প্রকৃত অপরাধীদের বাঁচিয়ে দেওয়ার জন্য।যাদের হেনস্তার উদ্দেশ্যে এসব মামলায় নাম দেওয়া হয়,তাদের উদ্দেশ্য করে জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী বলেন,আমাকে এভাবে হেনস্তা করার জন্য কেউ মামলায় আসামি করলে আমি তাদের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মানহানি মামলা করতাম।সম্প্রতি সুপরিচিত একটি ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর কর্ণধারসহ প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন কর্মকর্তার কাছে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে তিন কোটি টাকা দাবি করা হয়।টাকা না দিলে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় হতাহতের ঘটনায় হওয়া মামলায় আসামি করা হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়।এদিকে আইনজীবী পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি বলেন,তাদের সঙ্গে আরও অনেকেই আছেন ,যারা খুবই প্রভাবশালী।পুরো অর্থ না দিলে মামলা হয়ে যাবে ব্যবসায়িক গোষ্ঠীটির কর্ণধারের বিরুদ্ধে।হুমকিদাতা ওই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তাকে একটি বাসায় নিয়ে দেন-দরবার চালিয়ে টাকা আদায়ে ব্যর্থ হন।একপর্যায়ে নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা না পেয়ে আদালতের মাধ্যমে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা ঠুকে দেয়।এখানেই থেমে থাকেনি এসব চক্রের সদস্যরা।কিছুদিন পর আবারও টাকার জন্য চাপ দিয়ে জানায় ,চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দিলে নতুন করে আরও একাধিক মামলায় নাম দেওয়া হবে।চক্রটি সেই টাকা না পেয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় আরও একটি হত্যা মামলা করা হয় ব্যবসায়িক গোষ্ঠীটির কর্ণধারের বিরুদ্ধে।অথচ এই ব্যবসায়ী কখনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।এ ঘটনার মতোই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেও হত্যা মামলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।আর মামলাকে হাতিয়ার হিসাবে পুজি করে কয়েকটি চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল অঙ্কের টাকা।এ নিয়ে জনমনে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক।বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা।অনেকে বাসাবাড়িতে থাকতে পারছেন না। যারা গত সরকারের লেজুড়বৃত্তি করেননি,তারাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।এদিকে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারাও গনহারে নামে বেনামে মামলার বিষয়টি স্বীকার করেছেন,এছাড়াও সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,প্রতারক চক্র মামলা-বাণিজ্য করছে,তা সত্য।নিরপরাধ ব্যবসায়ী ও লোকজনদের মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ এসেছে।এসব বিষয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।এদিকে এসব মামলা সংক্রান্ত তথ্য বিষয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)কমিশনার মাইনুল হাসান বলেন‘ প্রতারকদের বিরুদ্ধে আমরা সতর্ক আছি।একটি চক্র অর্থ না পেয়ে মামলা দিচ্ছে বলে আমাদের কাছে অনেক অভিযোগ এসেছে।তাদের বিষয়টি আমরা নজরদারি করছি।সারাদেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থী ও নিরীহ লোকজনকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। মামলাগুলোর তদন্ত শুরু করা হয়েছে।এছাড়াও তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন,কোনো মামলার এজাহারে নাম থাকলেই যে গ্রেপ্তার করতে হবে,আইনে এমন বাধ্যবাধকতা নেই।তদন্ত শেষে তারপর গ্রেপ্তারের বিষয়টি আসে। তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে না,তাদের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম সহিংসতার ঘটনায় এত কম সময়ে সর্বাধিকসংখ্যক মামলা হয়েছে। ২০১৩ইং সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলনের সময় ২০০-এর বেশি মামলা হয়।যেসব মামলায় আসামি করা হয়েছিল একলাখের বেশি।কোটা সংস্কার আন্দোলন ও সরকার পতনের আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় হাজারের মতো শিক্ষার্থী,সাধারণ মানুষ এবং কয়েকটি দলের নেতাকর্মী নিহত হন।বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নামে একাদিক মামলা হচ্ছে বিভিন্ন থানায়।তাছাড়া ৫ই আগস্ট ২০২৪ইং থেকে ২৪শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং পর্যন্ত ঢাকাসহ সারা দেশে ৫০০-এর বেশি হত্যা মামলা হয়েছে।এসব মামলার বেশিরভাগ এজাহার একই ধরনের।প্রথম ১০ থেকে ২০ জন আসামি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাসহ প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তারা।এর মধ্যে অনেক মামলার বাদী চেনেন না আসামিকে।আসামিও বাদীর নাম শোনেননি কখনো এমনটা দাবী এসব মামলায় শিকার একাদিক ভুক্তভোগী ।এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।এছাড়া আন্দোলনে ছাত্র-জনতা নিহতে হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-অঙ্গসংগঠনের থানা,জেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরও আসামি করা হচ্ছে।কিছু কিছু মামলায় প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষও আসামি হচ্ছেন,যা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বিভিন্ন স্থান থেকে তথ্য এসেছে,দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তৎপর হয়ে উঠেছে কয়েকটি প্রতারক চক্র। তারা মিথ্যা অভিযোগে হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের অর্থ।বিশেষ করে ধনাঢ্যব্যবসায়ীদের টার্গেট করছে।আবার কেউ কেউ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকেও ঘায়েলের চেষ্টা করছে মামলার মাধ্যমে।এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ সদর দপ্তর বিশেষ নির্দেশনা দিয়ে বলেছে, মামলার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা যাতে হয়রানির শিকার না হন,সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।প্রতারণায় সম্পৃক্তদের দ্রুততম সময়ে আইনের আওতায় আনতে হবে।এই নির্দেশনা পেয়ে পুলিশ কর্মকর্তারাও কাজ শুরু করেছেন বলে জানা যায়।এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন,গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় মামলা নিয়ে প্রতারক চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠার গুরুতর অভিযোগ এসেছে।আইনজীবী পরিচয় দিয়ে কেউ কেউ প্রতারক চক্রদের সহযোগিতা করছে।তা ছাড়া প্রতারকদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও সুসম্পর্ক আছে।সুযোগ পেয়ে তারা মিলেমিশে অপকর্ম চালাচ্ছে।যারা এসব অপকর্ম করছে,তাদের নজরদারির পাশাপাশি আইনের আওতায় আনতে পুলিশের সব কটি ইউনিটপ্রধান ও জেলা পুলিশ সুপারদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।একাধিক ভুক্তভোগী বলেন,মামলার আসামিদের ধরতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।এসব অভিযানে নিরপরাধ অনেকে গ্রেপ্তার ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।তাছাড়া অভিযানের নামে গ্রেপ্তার-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহ করার তথ্যও মিলেছে।গত ২৫শে আগস্ট ঢাকার দোহার থানায় ১৭৪ জনের নামে একটি হত্যা মামলা হয়। এজাহারে থাকা আসামিদের ঠিকানার সূত্র ধরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়,রাজনৈতিক পরিচয় না থাকা সত্ত্বেও রাজধানীর একজন ব্যবসায়ীকে আসামি করা হয়েছে।তিনি দাবি করেছেন,গত১০ বছরেও গ্রামের বাড়িতে যাননি মামলার এজাহারে থাকা ভুক্তভোগী।এছাড়াও নাম প্রকাশ না করে ওই ব্যবসায়ী বলেন,আমরা সারাজীবন ব্যবসা করি।সে হিসেবেই যখন যে-ই সরকার আসে তাদের সঙ্গেই আমাদের মিলেমিশে চলতে হয়।আমরা কোনো রাজনীতি করি না।আমার নামে হত্যা মামলা করা হয়েছে,অথচ ১০ বছরে আমি এলাকাই যাইনি।এদিকে হত্যা মামলার বাদী শাজাহান মাঝি দাবি করেছেন,আসামিদের অধিকাংশকেই চেনেন না তিনি।তাহলে মামলাটি করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন,রাজনৈতিক মামলা,তাই সবাইকে চেনেন না,নেতারা যাদের নাম দিয়েছেন,তাদেরই আসামি তাদেরই করা হয়েছে।একইভাবে ঢাকার সাভারে আরও তিনজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর অভিযোগ করেন,তারা কখনো রাজনীতিই করেননি। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে যাননি। অথচ সাভার,ধানমন্ডি,পল্টন,ভাটারা,গুলশান, উত্তরাসহ কয়েকটি থানায় মামলা করা হয়েছে তাদের নামে।আবার মামলা করার আগে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করা হয়।চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মামলা ঠুকে দেওয়া হয় একের পর এক।এখন মামলা থেকে নাম বাদ দিতে ফের অর্থ দাবি করা হচ্ছে। যারা মামলা-বাণিজ্য করছে,তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনাসহ সুষ্ঠু তদন্ত করে মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার দাবি জানান সাভার বসবাসকারী এই তিন ব্যবসায়ী।তবে এ প্রসঙ্গে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা সাথে মুঠোফোনে কথা বলে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন বা তাদের সহযোগী নন,এমন কাউকে হয়রানি না করতে আমাদের কাছে নির্দেশনা আছে। আমরা বিষয়গুলো নিয়ে তদন্ত করছি।নিরপরাধ ব্যবসায়ী ও নিরীহ লোকজন হয়রানির শিকার হবেন না।যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে না,তাদের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।সারাদেশে বৈষম্য ছাত্র-জনতার আন্দোলনকালে গত ১৬ই জুলাই থেকে রাজধানীসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠে।শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন ৫ই আগস্ট২০২৪ইং পর্যন্ত এসব এলাকা যেন ছিল রণক্ষেত্র।এই তিন সপ্তাহ জুড়ে আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনীর পাশাপাশি পুলিশের গুলিতে প্রতিদিনই পড়েছে একাধিক লাশ। হত্যাকাণ্ড নিয়ে সঠিক হিসাব না পাওয়া গেলেও ২০০-এর বেশি প্রাণহানির তথ্য বিভিন্ন মাধ্যমে উঠে আসে।তবে সরকার পতনের পর সারা দেশের মতো রাজধানীর উত্তরায়ও হত্যা মামলা হয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাসহ স্থানীয় নেতাদের নামে।এছাড়াও ঢাকা জেলার সাভার-আশুলিয়া ও রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম ও পূর্ব থানায় এখন পর্যন্ত দের শতাধিক মামলা হয়েছে।এসব মামলার কয়েকটির আসামির তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে,আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পাশাপাশি কিছু অরাজনৈতিক ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীকেও আসামি করা হয়েছে।এসব গনহারে প্রতিটি মামলায় ১৫০ থেকে ৩০০-এর বেশি আসামি করা হয়েছে। আসামির তালিকায় আছেন নেতা,শিক্ষক,সাংবাদিক ডাক্তারসহ ব্যবসায়ীরাও।এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ঘুরে তথ্য পাওয়া যায়।দক্ষিণখানের আশকোনা এলাকায় মন্তাজ নামে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। তবে তার এক ছেলে ও এক ভাগনে ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন।সেই সুযোগ নিয়ে তাকে আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যাবসায়ী মন্তাজ।এছাড়াও প্রিয়াংকা সিটির মালিক সজল চৌধুরী ও তার ছেলেকে হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে।গত পাঁচ বছর স্থানীয় সংসদ সদস্য(এমপি) হাবিব হাসানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রেখে চলতে পারেননি সজল চৌধুরী।এজন্য তার কয়েক বিঘা জমি দখলে নিয়ে নেন হাবিব হাসান। তারপরও ছেলেসহ মামলার আসামি হয়েছেন।৫ই আগস্ট সরকার পতনের আগের দিন রাজধানীর জিগাতলা এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলায় গুলিবিদ্ধ হন আবদুল্লাহ সিদ্দিকী নামে এক শিক্ষার্থী।ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক)হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আবদুল্লাহকে হত্যা করে লাশ গুমচেষ্টার অভিযোগে ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের নির্দেশে ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যা মামলা হয়।যার বাদী হয়েছেন ফাইয়াজ আহমেদ রাতুল নামে এক ব্যাক্তি।অথচ এজাহারে নিজেকে পরিচয় দিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সহ-সমন্বয়ক হিসেবে।তিনি তার মামলার অভিযোগে বলেছেন,ঘটনার দিন আবদুল্লাহ সিদ্দিকীকে নিয়ে হাসপাতালে গেলে মামলার পাঁচ আসামি মরদেহ ময়নাতদন্ত না করে নিয়ে যেতে এবং দাফন করতে চাপ প্রয়োগ করে।তাদের ভয়ে মরদেহ ময়নাতদন্ত না করে দাফন করা হয়।অথচ সরজমিনের তথ্যসূত্রে দেখা যায়,মামলাটির পাচজন আসামিদের মধ্যে দুজন দেশের দুটি ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর কর্ণধার।এই মামলায় শেখ হাসিনাকেও আসামি করা হয়েছে।অজ্ঞাতপরিচয় আসামি আছে অন্তত আরো ২৫০ জন।যাদের বিরুদ্ধে লাশ গুমের চেষ্টা ও ময়নাতদন্ত না করে দাফনের জন্য চাপ প্রয়োগের অভিযোগ তোলা হয়েছে,এবিষয়ে এজাহারে থাকা মোবাইল নাম্বারে কল করে জানতে চাইলে,তাদের চেনেন কি-না এমন প্রশ্ন করতেই আমতা আমতা করতে থাকেন মামলার বাদী ফাইয়াজ আহমেদ রাতুল। একপর্যায়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।তারপর ১০ বারের বেশি কল করা হলেও তিনি আর কল রিসিভ করেননি।এরপর ফোন বন্ধ করে রাখেন মামলার বাদী ফাইয়াজ আহাম্মেদ রাতুল নামের ওই বেক্তি।এবিষয়ে খোজখবর নিতে ও নিজেকে সহ-সমন্বয়ক দাবি করা এই ফাইজা আহাম্মেদ রাতুল সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের কাছে।তাদের একজন আবদুল হান্নান মাসুদ বলেন,এই নামে(ফাইয়াজ আহাম্মেদ রাতুল)কেউ নেই।আর আমরা এলাকাভিত্তিক কোনো সমন্বয়ক দিইনি।অনেকেই এলাকায় নিজেদের সমন্বয়ক বা সহ-সমন্বয়ক পরিচয় দেন। সেগুলোর কেন্দ্রীয় কোনো অনুমোদন নেই বলে জানান এই সমম্বয়ক।সিএমএম(পল্টন আমলি)আদালতে হওয়া এক মামলার বাদী নিজেই ভুক্তভোগী। মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী মো:বিল্লাল হোসেন অভিযোগে বলেছেন,গত ৪ই আগস্ট তাকে পল্টনের তোপখানা রোডে গুলি করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।পরে ৬ আগস্ট আবার তাকে পল্টনের একটি রাস্তায় ফেলে রেখে যাওয়া হয়।এ মামলায় আরও একটি ব্যবসায়িক গ্রুপের কর্ণধারকে আসামি করা হয়।তবে মামলার বিষয়ে জানতে বাদীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।সরকার পতনের দিন সকালে রাজধানীর উত্তরায় বিক্ষোভ চলাকালে লাবলু মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এক মাস পর নিহতের চাচাতো ভাই দুখু মিয়া ২২০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন উত্তরা পূর্ব থানায়।আসামিদের মধ্যে ২১০ জন রংপুরের বাসিন্দা।নিহত লাভলু ও তার ভাই মামলার বাদী দুখু দুজনের বাড়িই রংপুরে। ঢাকা আশেপাশের এলাকার ঘটনা ও ঢাকার বাইরের থানায় হওয়া মামলায় রংপুরের ২১০ জন আসামি থাকায় মামলাটির অভিযোগের সত্যতা নিয়ে নানা প্রশ্ন ও সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে খোদ তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের মধ্যেই।এসব গনহারে মামলা নিয়ে উপদেষ্টা ও রাজনীতিকদের মত,গনহারে মামলা নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক উপদেষ্টা এবং বিভিন্ন দলের রাজনীতিকরা।এর মধ্যে গত ২১শে সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে নিম্ন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির অভিভাষণ অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা ড.আসিফ নজরুল বলেন,গায়েবি মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানি এ অন্তর্বর্তী সরকার সমর্থন করে না।এসব মামলা দিয়ে হয়রানি করার সংস্কৃতি থেকে বের হতে হবে।এ ক্ষেত্রে বিচারকদের দেখতে হবে অযথা নাগরিকরা যেন কোনোভাবে হয়রানি না হয়।গত ২০শে সেপ্টেম্বর দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ে বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণকালে ডাক,টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো:নাহিদ ইসলাম বলেন,সারা দেশে যে মামলাগুলো হয়েছে,তার মধ্যে অনেক মামলাই আসলে আবার গ্রহণযোগ্য নয়।আমরা সে ক্ষেত্রে আহজানিয়েছি,সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যাতে পুলিশ প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেয় এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে।গত ২৮শে আগস্ট দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সারাদেশে গনহারে মামলা দেওয়া হচ্ছে।যে’কোনো মামলা নথিভুক্ত করার আগে প্রাথমিক তদন্ত করে নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং