স্টাফ রিপোর্টারঃ
অফিসে প্রবেশ করেই দেখা যায় যে যার মতো ফাইলপত্র ও বিভিন্ন কাগজপত্রে সিল মারায় ব্যস্ত। ভাবসাবে তাদের কর্মকর্তা মনে হলেও আসল পরিচয় হচ্ছে ওরা‘দালাল’চাকরি ছাড়াই রীতিমতো অফিস করছেন তারা।বাস্তবে এসব দালালরাই নিয়ন্ত্রণ করছেন বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি(বিআরটিএ)সাভার কার্যালয়।দালালদের আশ্রয়-প্রশয় দিয়ে অফিসের চেয়ার -টেবিলে বসিয়ে ঘুষসহ নানামুখী দুর্নীতিমূলক কর্মকান্ড চালানোর অভিযোগ উঠেছে।বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ(বিআরটিএ)’র মটরযান পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে।এছাড়াও অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের।সরেজমিনে তথ্যসুত্রে বেরিয়ে আসে অনিয়মের নানান চিত্র।তাছাড়া গাড়ির ফিটনেস,লাইসেন্স করতে গেলো ভোগান্তির শিকার সেবা নিতে আসা অসংখ্য ভুক্তভোগী।এছাড়াও আছে দালালের দৌরাত্ম্য,দালালদের বাড়তি অর্থ প্রধান না করলে কোনো কাজই হয় না ঢাকার সাভার বিআরটি’র এ অফিসে।এদিকে ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যাতিত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন না দেয়ার বিধান থাকলেও উৎকোচের বিনিময়ে লার্নার(শিক্ষানবিশ)কার্ড ধারীদের নিয়মিতই রেজিস্ট্রেশন দেয়া হচ্ছে সাভারের বিআরটি’র এ অফিস থেকে।এমনকি দালালের মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ প্রধানে বিনিময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।এদিকে সেবা গ্রহীতাদের অভিযোগ,দালালদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে সাভারের এই(বিআরটিএ)কার্যালয়টি।ওইঅফিসের কর্মকর্তার যোগসাজশে গড়ে উঠেছে দালালদে শক্তিশালী সিন্ডিকেট দল।তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ক্তভোগীর এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন, গাড়ির ফিটনেস এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে এলে ভোগান্তির শেষ নেই।দালাল না ধরলে কোনো কাজই হয় না বলে জানান সেবা গ্রহিতারা।লাইসেন্স প্রতি দুই গুণ,তিন গুণ অর্থ প্রধান করতে হয়।এমনকি বিআরটিএ ‘র ঢাকা জেলা সার্কেলের সহকারী পরিচালক(ইঞ্জিঃ) এর কার্য্যালয়ের মটরযান পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম খান বাড়তি উৎকোচ ছাড়া কোন ফাইলই স্বাক্ষর করেন না বলেও অভিযোগ উঠে।এমনকি এই অফিসের এক টেবিলে গেলে বলে ওই টেবিলে যান।আকারে-ইঙ্গিতে টাকাও দাবি করা হয় সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীদের।দালালদের মাধ্যমে টাকা দিলে গাড়ীর ফিটনেসসহ যে কোন সমস্যা নিমিষেই সমাধান হয়ে যাচ্ছে।গত ১৮ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং তারিখে সরেজমিনে সাভার বিআরটিএ অফিসে ঘুরে দেখা গেছে,বিআরটিএ অফিসে মাত্র তিন জন সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছে।তারমধ্যে অফিসপ্রধান আসেন সপ্তাহে দুই দিন।এই অফিসে বাবুল,বাবু,হিরন,ফারুক,শাহাদাৎ,স্বপনসহ প্রায় এক ডজনেরও বেশি দালালের অবস্থান রয়েছে।এছাড়া অফিসের সরকারি টেবিল চেয়ারে বসে’এমনকি বিআরটিএ’র গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষিত(রেকর্ড রুম)কক্ষে দালালদের কাজ করতে দেখা যায় যার কয়েকটি স্থির চিত্র সংরক্ষিত বিসিএন২৪ এর কাছে।আর এসব দালাল নিয়ন্ত্রন করেন মটরযান পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম খান ।ঘুষ লেনদেনের কাজটি হয়ে থাক পরিদর্শক আমিনুল ইসলামের দালাল বাবু,বাবুল,হিরন ও স্বপনের মাধ্যমেই।এদিকে বাস,মিনিবাস,প্রাইভেটকার,মাইক্রোবাস,হায়েসসহ বিভিন্ন যানবাহন প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০টি এমনকি কোন কোন দিন শতাধিক গাড়ীরও ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।নানান সমস্যা র কথা বলে দুই থেকে থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে দালালরা ফাইলে নির্ধারিত (বি)সাংকেতিক চিহৃ দিয়ে দেন।পরে ওই গাড়ীর ফাইলটি পরিদর্শক আমিনুল ইসলামের টেবিলে পৌঁছলে তিনি সাংকেতিক চিহৃ দেখে বুঝতে পারেন টাকা লেনদেন হয়েছে এবং ফাইলটি কোন দালাল পাঠিয়েছে।পরে তিনি ফাইলটি স্বাক্ষর করেন।পরিচয় গোপন করে সাভার বিআরটিএ অফিসে স্বপন নামে এক দালালের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,যেদিন কম গাড়ী আসে সেদিনও ৪০ থেকে ৫০টি গাড়ীর ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।টাকা দিতে হয় কিনা জানতে চাইলে বলেন, গাড়ীতে সমস্যা থাকলে টাকা পয়সা তো লাগেই।অনিয়ম দূর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে মটরযান পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম খান মুঠফোনে বলেন,তার অফিসে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি হয় না।তিনিসহ তিন জন সরকারী লোক রয়েছে।গত এক বছরে খানা জরিপ করে দেশের সেবা খাতের আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবেদন সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ(টিআইবি)।জরিপে বিআরটিএ সবচেয়ে বেশী দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে এ সংস্থাটি।এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন,বিআরটিএর মতো সেবায় উচ্চ দুর্নীতি ও ঘুষ বিদ্যমান,যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ সেবা প্রাপ্তির অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করছে এক চক্র।অথচ স্থানীয় প্রশাসনের (সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্য্যালয়ের সামনে) নাকের ডগায় বিআরটিএ অফিসে ঘুষ দূর্নীতি ও দালালদের দৌরাত্ব চললেও কোনো এক রহস্যজনক কারনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে জানা সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীরা।বিআরটিএ এর ঢাকা জেলা সার্কেলের সহকারী পরিচালক(ইঞ্জিঃ)এর কার্য্যালয়ের সহকারী পরিচালক মঃ মুছা মুঠফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি সপ্তাহে মাত্র দুদিন অফিসে আসি।অনিয়ম,ঘুষ,দূর্নীতি ও দালালদের দৌরাত্ব ও অফিসের ভিতরে চেয়ার টেবিলে বসিয়ে দালালদের দিয়ে কাজ করানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এসব আমি কিছু জানি না।তবে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।সাভার বিআরটিএ অফিস থেকে দালালদের দৌরাত্ব ও ঘুষ, বাণিজ্য বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানান‚ক্তভোগীরা।এদিকে সাম্প্রতিক জাতীয় প্রিন্ট মিডিয়াতে সংবাদ প্রচার হলেও এসব অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যাবস্থা গ্রহন করেন নাই বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ(বিআরটিএ)।
চলবে দ্বিতীয় কলামে,,,,,,,।
আপডেট:০৫.৩০ মিনিট
পর্ব-১