স্টাফ রিপোর্টারঃ
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার গন অভ্যুত্থানের সময় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অন্যতম হামলাকারী ও সাভার বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন মাদবর(৪৭)ঢাকা কেন্দ্রীয় গলায় গামছা লাগিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।পরে তাকে কারারক্ষী উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ল(ঢামেক)হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
(১৫ই জুন ২০২৫ইং)রবিবার বেলা আনুমানিক সারে ১১ ঘটিকার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সূর্যমুখী ভবনের একটি কক্ষে নিজের গলায় গামছা পেঁচিয়ে ফাঁস আত্ম হত্যা করেন বিরুলীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন।এদিকে সাইদুর রহমান সুজন(৪৭)এর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোঃ ফারুক হোসেন।এবিষয়ে কারাগার সূত্র জানা যায়,বিরুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন মাদবর বন্দি হিসেবে সূর্যমুখী ভবনের একটি সাধারণ কক্ষেই ছিলেন।সকালে প্রতিদিনের মতই সাধারণ বন্দীদের কারা অভ্যন্তরী খোলামেলা পরিবেশে বের হতে দেওয়া হয়,এসময় সাধারণ কক্ষের সব বন্দী বাহিরে গেলাও সাইদুর রহমান সুজন না গিয়ে কক্ষ খালি পেয়ে তার ব্যবহৃত গামছা দিয়ে গলায় ফাস লাগিয়ে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কারা হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে হাসপাতাল কর্তব্যরত চিকিৎসক বেলা ১২ ঘটিকার দিকে তাকে ঘোষণা করেন।এদিকে ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত হতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কারা মহাপরিদর্শক(আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোঃ মোতাহের হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,বন্দি সাইদুর রহমান সুজন ডিটেনশনে সূর্যমুখী ভবনের একটি কক্ষে ছিলেন।সকালে বন্দি সুজন নাস্তাও করেছেন।ওই কক্ষে তিনজন বন্দি,একজন সম্ভবত আদালতে গিয়েছেন,অপরজন ঘুমিয়ে ছিলেন,এই সুযোগে সুজন নিজের গামছা পেঁচিয়ে জানালার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেন।পরে তাকে কারা হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে মারা যান।তাছাড়া এবিষয়ে কারা আইজি প্রিজন্স জানান,তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা আছে,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনেরও মামলা আছে।তবু কারা অভ্যন্তরে আত্মহত্যার ঘটনা কীভাবে হলো,এই বিষয়ে একটি কমিটি করে তদন্ত করে দেখা হবে।এদিকে সাইদুর রহমান সুজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের হত্যা মামলাসহ সর্বমোট ১৫টি মামলা রয়েছে ।তাছাড়া ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন কে প্রকাশ্যে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ছুড়তে দেখা যায় যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগা যোগ মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ভাইরাল।এছাড়া এলাকায় জমি দখলসহ আধি পত্য বিস্তারের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে জুলাই বিপ্লবের আগে থেকেই একাধিক অভিযোগ তথ্য পাওয়া যায়।৫ই আগস্ট৷ ২০২৪ইং আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন ও স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজনও আত্মগোপনে চলে যান। তবে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে রাজধানীর উত্তরার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকে তিনি কারাবন্দি ছিলেন।ফ্যাসিবাদ হাসিনার শাসনামলে ২০২০ইং সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর২০২৪ইং চাঁদাবাজির অভিযোগে বিরুলিয়া ইউনিয়নের কাকাবর এলাকায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সাইদুর রহমান সুজন বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়:০৫:৩৫ মিনিট
১৫ই জুন ২০২৫ইং
ডিএসকেএম/বিসিএন