মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি।
মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলায় এক ব্যক্তিকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ ‘বানিয়ে দেওয়ার’ কথা বলে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহা জাহানের বিরুদ্ধে।সালেহা জাহান ৫ লাখ টাকা চুক্তিতে এক মাসের মধ্যে বেহালা বাদক গুরু চন্দ্র সরকারকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ পাইয়ে দেবে বলে ওই টাকা হাতিয়ে নেন।মুক্তিযোদ্ধার সনদ দিবে তো দূরের কথা,এ বিষয় কথা বললে কিংবা টাকা চাইলে উল্টো গুরু চন্দ্রকে বিভিন্ন ভাবে হুমকির চাপে রাখার অভিযোগও রয়েছে সালেহা জাহানের বিরুদ্ধে।ভুক্তভোগী পরিবারের কাছের এক আত্মীয়ের সঙ্গে সালেহার টাকা নেওয়ার একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে।এই অডিও কলরের্কডের তথ্যে অনুযায়ী জানা যায় গত ২০২১ইং সালে সিংগাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের বাসিন্দা জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা যুব মহিলা লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সালেহা জাহান মুক্তিযোদ্ধা সনদ বানিয়ে দেবে বলে ৫লক্ষ টাকা নেন গুরু চন্দ্র সরকারের কাছ থেকে। গুরু চন্দ্রের মেয়ে গীতা সরকার স্থানীয় রূপালী ব্যাংকের হিসাব নম্বর থেকে সালেহা জাহানের ব্যাংক এশিয়ার একটি হিসাব নম্বরে রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্টের (আরটিজিএস) মাধ্যমে ২০২১ইং সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সাড়ে ৩ লাখ টাকা দেন।আর নগদে দেন ২০ হাজার টাকা। চুক্তি হয়,মোট ৫ লাখ টাকা দিলে এক মাসের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সনদ ম্যানেজ করে দেবে বলে জানান সালেহা জাহান।দুই বছর সাত মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও সনদ হাতে পাননি গুরু চন্দ্র সরকার। তবে টাকা চাইতে গেলে উল্টো চাপের মধ্যে রাখেন ক্ষমতাসীন দলের এই নেত্রী।পরবর্তী সময়ে গুরু চন্দ্র সরকারের কাছে এক আত্মীয় ঢ়াকায় বেসরকারি একটি টেলিভিশনে কর্মরত আছেন।ওই সাংবাদিকের সঙ্গে কথা হয় সালেহা জাহানের,পরে ফোনালাপ ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এই ধরনের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেড়িয়ে আসে।
গুরু চন্দ্রকে মেয়ে গীতা সরকার বলেন,যেখানে এক মাসের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে সালেহা জাহান, সেখানে আজ দুই বছর ৭ মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে। এখন টাকা চাইতে গেলে সালেহা উল্টো আমাদের ওপর হুমকি সহ বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করেন। এই টাকাগুলো স্কুল ও কলেজে অধ্যয়নের পাশাপাশি টিউশনি করে জমানো টাকা,এছাড়াও বড় বোনের কাছ থেকে ধার করা দেড় লাখ টাকা।পুরো টাকা ম্যানেজ না হওয়ায় স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সালেহা জাহানকে সবমিলিয়ে ৫লক্ষ টাকা পরিশোধ করি মুক্তিযোদ্ধা সনদের জন্যে।
গুরু চন্দ্র সরকারের মেয়ে গীতা আরও বলেন,বাবার বয়স প্রায় ৭০ বছর,সালেহা জাহানের ফাঁদে পা দিয়ে এমন একটি কাজ করেছি, তা আমার ঠিক হয়নি। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় আমার পরিবারের মান-সম্মান অনেকটা হানি হয়েছে।এ বিষয় অভিযোগের ব্যাপারে জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহা জাহান বলেন,টাকা নিয়েছিলাম,তবে ফেরত দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।এছাড়াও সালেহা জাহান কে প্রশ্ন করলে আপনি কি টাকার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা সনদ দিয়ে থাকেন -এমন প্রশ্নে তিনি কোনো সদ উত্তর দিতে পারেননি।উল্টো বিষয়টি নিয়ে নিউজ না করার জন্য বিভিন্ন তদবিরও করেছেন তিনি।বিষয়টি নিয়ে মানিকগঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক রোমেজা আক্তার বলেনসালেহা জাহানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সেই বিষয়টি কেন্দ্রীয় সভানেত্রীকে জানিয়েছি।সত্যতা প্রমাণিত হলে সালেহার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।