ঋণের দায়ে সাভারের ইমান্দিপুর এলাকা থেকে শিশু সন্তানকে অপহরণ করেন নেশাগ্রস্ত যুবক মো:মুসলিম পাটোয়ারী(৪০)এদিকে পোশাক শ্রমিক মায়ের কাছ থেকে টাকা খসাতে প্রথম স্বামীর পুত্র সন্তানকে অপহরণ করে পঞ্চাশ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তিনি।পরে শিশু সন্তানের অপহরণের বিষয়ে সাভার মডেল থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেন মা পারুল বেগম।পরে জিডির উপর ভিত্তি করে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সাভার মডেল থানার সাহসী চৌকস পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থেকে সৎ বাবা মো: মুসলিম পাটোয়ারী(৪০)ও তাঁর সহযোগী মো:মোশারফ হোসেন(৫০)’কে গ্রেপ্তার করেন।শিশুটি অপহরণের সাথে জড়িত ও উদ্ধার অভিযান গ্রেপ্তার দুই আসামির স্বীকারোক্তি বিষয়ে বুধবার(২৪শে এপ্রিল ২০২৪ইং)তারিখে দুপুর ১২ ঘটিকার সময় সাভার মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও ট্রাফিক উত্তর বিভাগ)আব্দুল্লাহিল কাফী,পিপিএম(বার)।এ সময় সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মোহাম্মদ শাহ্জামান পিপিএম,সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত)আব্দুর রাশিদ,সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক(অপারেশন)নয়ন কারকুন ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাহমুদুল হাসানসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।শিশু সন্তান অপহরণের সাথে জড়িত গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন,চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার পাটারি বাড়ি পদুয়া গ্রাম এলাকার সুখ চাঁনের ছেলে মো:মুসলিম পাটোয়ারী(৪০)ও একই উপজেলার সাহেদাপুর গ্রাম এলাকার মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে মো: মোশারফ হোসেন(৫০)।এবিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাভার মডেল থানার পুলিশ বলেন,সাভারের ইমান্দিপুর এলাকার ভাড়া বাসা থেকে(২১শে এপ্রিল ২০২৪ইং)বিকেল ৩ ঘটিকার দিকে পোশাক শ্রমিক পারুল বেগমের প্রথম স্বামী তরিকুল ইসলামের ৮ বছরের শিশু পুত্র মো:ইমামুল’কে অপহরণ করেন তারই সৎ বাবা মো:মুসলিম পাটোয়ারী(৪০)ও তাঁর সহযোগী মো:মোশারফ হোসেন(৫০)এছাড়াও পুলিশের তথ্যসূত্র অনুযায়ী আরো জানা যায়,অপহরণের শিকার ইমামুল’কে খেলনা কিনে দিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার পদুয়া পাটারি বাড়ি গ্রামে নেওয়া হয়।সেখানে মুসলিম পাটোয়ারী তার পরিচিত মোশারফ হোসেনের বাড়িতে ইমামুল’কে আটকে রাখেন।এরপর পরিচয় লুকিয়ে বিভিন্ন নম্বর থেকে মুঠোফোনে কল করে শিশুটির মা পারুল বেগমের কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।এ ঘটনায়(২২শে এপ্রিল ২০৩৪ইং)পারুল বেগম সাভার মডেল থানায় একটি জিডি করেন।এছাড়া সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মাহমুদুল হাসান এই জিডির তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন।পরে পুলিশ উদ্ধার অভিযানে নামে।এরমধ্যেই অভিযুক্তদের দেওয়া ঠিকানায় গেলে পারুল বেগমকেও জিম্মি করা হয়।পরে খবর পেয়ে সাভার মডেল থানার পুলিশ সাহসীকতার সাথে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে(২৩শে এপ্রিল ২০২৪ইং)সকাল সাড়ে ১১ ঘটিকার দিকে সন্দেহভাজন হিসেবে মুসলিম পাটোয়ারী৪০)ও মোশারফ হোসেন(৫০)’কে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।পরে গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদের দেওয়া তথ্যের অনুযায়ী শিশুটিকে কচুয়া থানার পদুয়া পাটারি বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়।বুধবার(২৪শে এপ্রিল ২০২৪ইং)দুপুরে গ্রেপ্তার দুই আসামিকে ঢাকার আদালতে পাঠানো হয়।এছাড়াও শিশুটিকে তার মায়ের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে বলে জানান।এদিকে অপহৃত শিশুটির মা পারুল বেগমের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান,২০০৬ইং সালে তরিকুল ইসলামের সঙ্গে তার পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়।তাদের সংসারে আবু সালেহ(১৩)ও ইমামুল হক(৯)নামের দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে।২০১৮ইং সালে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে প্রথম স্বামী তরিকুল অন্যত্র বিয়ে করেন,পরে তাকে তালাক প্রদান করেন স্ত্রী পারুল বেগম।এরপর মুসলিম পাটোয়ারীর সঙ্গে বিয়ে হয় পারুল বেগমের।৪ বছরের দ্বিতীয় সংসারে মাদকাসক্ত মুসলিম পাটোয়ারীর ঘরে কোন সন্তান জন্ম নেয়নি।পোশাক শ্রমিক মায়ের কাছ থেকে টাকা খসাতে প্রথম স্বামীর পুত্র সন্তানকে অপহরণ করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন নেশাগ্রস্ত দ্বিতীয় স্বামী মুসলিম পাটোয়ারী(৪০)।পরে বাধ্য হয়ে পুলিশের শরণাপন্ন হলে মায়ের কোলে সন্তানকে ফিরিয়ে দেয় সাভার মডেল থানা সাহসী চৌকস পুলিশ সদস্যরা।এতে বুকের রত্ন ফিরে পেয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে পুলিশের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন পোশাক শ্রমিক পারুল বেগম।তবে এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মোহাম্মদ শাহ্জামান পিপিএম বলেন,পঞ্চাশ হাজার টাকার জন্য সৎ বাবা শিশু ইমামুলকে অপহরণ করেছিলেন।এ ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়।শেষ পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।সাথে উদ্ধার করা হয়েছে অপহৃত শিশুটিকে।গ্রেপ্তার সৎ বাবা মো:মুসলিম পাটোয়ারী ও তাঁর সহযোগী মো:মোশারফ হোসেনকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।