নরসিংদী ছাগলকাণ্ডে আলোচিত তরুণ মুশফিকুর রহমানের(ইফাত)বাবা রাজস্ব কর্র্তা মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকির খোঁজ মিলছে না।তবে ছাগলকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি।তাছাড়া লায়লা কানিজ লাকি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান।সরকারি তিতুমীর কলেজের বাংলা বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপকের চাকরি ছেড়ে ২০২২ইং সালে রাজনীতিতে এসেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান হন তিনি।এছাড়াও তিনি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক।তবে স্বামী এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের দুর্নীতির তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশের পর থেকে তাকে মাঠে দেখা মিলছেনা না স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে হঠাৎ করে উধাও।রায়পুরার উপজেলা কার্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন লায়লা কানিজ লাকি।কোনো ছুটি না নিলেও রোববার(২৩শে জনু ২০২৪ইং)রায়পুরা উপজেলার অফিস করেননি।নিজ বাড়িতেও নেই তিনি।তার ওয়ান্ডার পার্কেও পাওয়া যায়নি তাকে।তাকে ফোন করেও পাওয়া যাচ্ছে না।তিনি এখন কোথায় আছেন,তা-ও কেউ বলতে পারছে না।কিন্তু তিনি কেন আত্মগোপনে?তার সমস্যা কোথায়?এমন নানা প্রশ্ন স্থানীয়দের মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে বলে জানা যায়।উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তারা বলছেন,উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকি ঈদের দুদিন আগে অফিস করেছেন।ঈদের ছুটি শেষ হলেও একবারের জন্যও কার্যালয়ে আসেননি।তাদের ধারণা,তিনি ছাগলকাণ্ডে বেশ বিব্রত ও আতংকিত।সাংবাদিকরাও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর পেতে তার কার্যালয়ে এসে খোঁজাখুজি করছেন।প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে তাই বোধহয় তিনি কার্যালয়ে আসছেন না।কবে আসবেন,তাও জানেন না তারা।রায়পুরার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)মোঃ ইকবাল হাসান জানান,ঈদের পর উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ তার কার্যালয়ে আসেননি।রোববার সকালে অনুষ্ঠিত উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক মিটিংয়েও তিনি অংশগ্রহন করেননি।তাছাড়া তিনি কেন আসেননি,আমাদের জানানো হয়নি।কোনো ছুটি নিয়েছেন তা-ও কোনো লিখিত নোটিশ কিংবা বলেও শুনিনি।এদিকে সৎ ছেলের এক ছাগলকাণ্ডেই খোঁজ মিলেছে লায়লা কানিজ লাকির অঢেল সম্পত্তির।শিক্ষিকা থেকে একজন উপজেলা চেয়ারম্যানের এতো সম্পত্তি জেনেই চোখ কপালে এলাকার সাধারণ জনগনের।এবিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়,রায়পুরার মরজালে ৩০ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা আলিশান ওয়ান্ডার পার্ক ও ইকো রিসোর্টটি লায়লা কানিজ লাকির।যা স্থানীয়ভাবে লাকি পার্ক নামেও পরিচিত।পার্কটির ভেতরের প্রায় তিন বিঘা আয়তনের লেকটি লায়লা কানিজের‘লাকি মৎস্য খামার’নামে নিবন্ধিত।নরসিংদীর মরজাল বাসস্ট্যান্ড থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বেই রয়েছে মতিউর রহমান ও লায়লা কানিজ দম্পতির আধুনিক স্থাপত্যের ডুপ্লেক্স বাড়ি।আরো নরসিংদীতে লায়লা কানিজ লাকির আলিশান ডুপ্লেক্স বাড় সরেজমিনে লায়লা কানিজের আলিশান বাড়ির চাকচিক্য দেখতে গেলে ভেতরে প্রবেশ করতে দেননি কেয়ারটেকার।তিনি বলেন,উপজেলা চেয়ারম্যান বাড়িতে নেই।তিনি ঈদের পর একবার এসেছিলেন কিন্তু বেশিক্ষণ থাকেননি।ঢাকায় চলে গেছেন,বাড়ি বেশিরভাগ সময়ই খালি থাকে।জানা গেছে,গাজীপুরের পূবাইলে আপন ভুবন নামে বিনোদন পার্ক ও পিকনিক স্পট থেকে শুরু করে রয়েছে বাণিজ্যিক এলাকায় কোটি কোটি টাকার জমি-প্লট রয়েছে লাকির।অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে,শিক্ষক থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া লায়লা কানিজের সম্পদের মধ্যে ১৫৪ শতাংশ কৃষিজমি ছাড়াও রয়েছে রাজউকে পাঁচ কাঠা,সাভারে সাড়ে ৮ কাঠা,গাজীপুরে ৫ কাঠা,গাজীপুরের পুবাইলে ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ ও ২ দশমিক ৯০ শতাংশ,গাজীপুরের খিলগাঁওয়ে ৫ শতাংশ ও ৩৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ,গাজীপুরের বাহাদুরপুরে ২৭ শতাংশ,গাজীপুরের মেঘদুবীতে ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ,গাজীপুরের ধোপাপাড়ায় ১৭ শতাংশ,রায়পুরায় ৩৫ শতাংশ,৩৫ শতাংশ ও ৩৩ শতাংশ,রায়পুরার মরজালে ১৩৩ শতাংশ,সোয়া ৫ শতাংশ,৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ,২৬ দশমিক ২৫ শতাংশ ও ৪৫ শতাংশ,শিবপুরে ২৭ শতাংশ ও ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ,শিবপুরের যোশরে সাড়ে ৪৪ শতাংশ,নাটোরের সিংড়ায় ১ একর ৬৬ শতাংশ জমি।লায়লা কানিজ লাকির ওয়ান্ডার পার্ক
আর এসব সম্পদ ছেড়েই এখন লাপাত্তা হয়েছেন লায়লা কানিজ লাকি।এসব বিষয়ে জানতে লায়লা কানিজ লাকির ব্যবহৃত মোবাইলফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।যে কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের(এনবিআর)কাস্টমস,এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট ড. মোঃ মতিউর রহমানকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে।পাশাপাশি সোনালী ব্যাংক থেকেও অপসারণ করা হয়েছে তাকে।তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)।
বিস্তারিত আরো থাকছে দ্বিতীয় কলামে,,,