নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকার সাভারের আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে ছিল নিয়মিত ওঠাবসা,এখন বিএনপি নেতা সেজে ব্যবসা দখল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন এক ব্যক্তি। আওয়ামীলীগের পদ না থাকলেও আওয়ামী নেতাদের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করতে দিন রাত ব্যস্ত সময় পার করেছেন তিনি।এখন দিন বদলের পর জোর করেই বিএনপি নেতা হওয়ার চেষ্টা করছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে এলাকাবাসীর মুখে।অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতাদের আত্মীয় স্বজনকে সাথে নিয়ে খোলস বদলে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যবসা দখলের চেষ্টা করছেন তিনি।এমনকি বিএনপির একটা পদ বাগিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি।সাভারে শরীফুল ইসলাম শিশির নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এসমস্ত অভিযোগ উঠেছে।সাভারের সাবেক সংসদ সদস্য ডা: এনামুর রহমান ও মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সাথেও তার সখ্যতার প্রমাণ হাতে এসে পৌছেছে এ প্রতিবেদকের।এসব নেতাদের সাথে ছবি তুলে রেখে আগেও বিভিন্ন মহল থেকে সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করতেন এই শরিফুল ইসলাম।তবে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর তিনি আগের সব ইতিহাস ঝেড়ে ফেলে বিএনপির নেতা সাজার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ৷কথিত এই নেতা শরীফুল ইসলাম শিশির ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানার পাথালিয়া ইউনিয়নের ধনিয়া গ্রামের নুরু মিয়ার ছেলে।পাথালিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা পারভেজ দেওয়ানের সাথেও তার সখ্যতা ছিল বলে জানা যায়।কথিত এই খোলোস পালটানো নেতা শরীফুল ইসলাম শিশিরের পেশাগত তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।তবে সাভারের পার্শ্ববর্তী ধামরাই উপজেলার এক সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতার সাথে মাছের ব্যবসা রয়েছে বলে জানা গেছে।গত(৫ই আগস্ট ২০২৪ইং) আওয়ামী লীগের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পরদিন(৬ই আগস্ট ২০২৪ইং)শরীফুল ইসলাম শিশির কয়েকজন বিএনপির কর্মীকে ডেকে নেন।অভিযোগ,সেদিন সে’সকল কর্মীকে নিজের সাথে কাজ করার কথা বলেন।তাদের টাকাও দিতে চান।তবে বিএনপির কর্মীরা তার সাথে রাজনীতি করবেনা বলে জানালে তিনি সে’সকল কর্মীদের হুমকি ধামকি ও অকথ্যভাষায় গালাগালি দিয়ে তাড়িয়ে দেন।ধনিয়া গ্রামের স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়,শিশির স্থানীয় একটি মসজিদের দানবাক্স তালা মেরে দখল করতে চেয়েছিলেন। মসজিদের দানের টাকা নয়-ছয় করা হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে তিনি দানবাক্স নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে চেয়েছিলেন।পরে এলাকাবাসীর বাঁধায় সেখান থেকে পিছপা হন।গত(৫ই আগস্ট ২০২৪ইং)পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি শুরু হলে,শিশির এলাকায় পাহাড়া দেয়ার জন্য বাড়ি বাড়ি থেকে ২০০ টাকা করে চাঁদা তোলার চেষ্টাও করেন।তখন স্থানীয় বিএনপি নেতা ও স্থানীয় মুরুব্বীরা তাকে বাঁধা দেন।শিশিরের বিরুদ্ধে আছে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণেরও অভিযোগ।আশুলিয়ার নয়ারহাট বাস টার্মিনাল এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা শিশিরকে মাসোয়ারা প্রদান করে ব্যবসা করে আসছে বলে অনেকেই দাবি করেছেন।বিএনপি নেতা হওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে বিএনপির কর্মীদের পাশে না পেয়ে এখন বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের আত্মীয় স্বজনকে সাথে নিয়ে তিনি চলা ফেরা করেন।আওয়ামী লীগের লোকজনকে পুনর্বাসন ও ব্যবসায় সাথে রাখার আশ্বাস দিয়ে তাদের নিজের দিকে ভিড়িয়েছেন তিনি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন শিশিরের সঙ্গীর তালিকায় আছেন ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সায়দুল ইসলামের ভাগিনা ছাত্রলীগ কর্মী সোহাগ,ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক মাশরিকুর ইমন,ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সদস্য নজর আলীর ছেলেসহ আরো অনেকেই।অভিযোগ আছে আশুলিয়ার নয়ারহাট থেকে নবীনগর এলাকার বেশ কিছু কারখানায় গিয়ে বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে ব্যবসা দখলে নেয়ার চেষ্টা করেছেন কথিত এই শিশির।কিন্তু সুবিধা না করতে পেরে সেখানে ছাত্রদের দিয়ে আন্দোলন করাবেন বলেও হুমকি দিয়ে এসেছেন।কেউ কেউ বলছেন,ব্যবসা না পেয়ে চলমান পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভে শ্রমিকদের উসকানোর চেষ্টাও করে থাকতে পারেন এই ব্যক্তি।এসব বিষয়ে জানতে শরীফুল ইসলাম শিশিরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তার মোবাইলে পাওয়া সম্ভব হয়নি।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাথালিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা বিএনপির এক কর্মী বলেন,শিশিরকে কোনদিন বিএনপির প্রোগ্রামে দেখিনাই।সারা বছর তাকে আওয়ামী লীগের লোকজনের সাথেই দেখেছি।এখন শুনি তিনি নাকি বিএনপি নেতা সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।এমন সুবিধাবাদী লোক যদি বিএনপিতে জায়গা পায় তাহলে বিএনপির নামই খারাপ হবে।আমরা আশা করব আমাদের দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা তার বিষয়টি দেখবেন।পাথালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান বলেন,শরীফুল ইসলাম শিশির আমাদের দলের কেউনা।বিএনপির কোন অঙ্গ সংগঠনেও তার কোন পদ নেই বলেই জানি।তবে তার বিরুদ্ধে এত এত অভিযোগের ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা।তিনি ব্যক্তি হিসেবে কোন কোন অপরাধের সাথে জড়িত কি জড়িত না তা আমি বলতে পারছিনা।তবে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে যদি সে কোন অপকর্ম করার চেষ্টা করে থাকে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।আশুলিয়া থানা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব আনিছুর রহমান বলেন,বিএনপির কোন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনে পাথালিয়ার শিশির এর কোন পদ নেই বলেই জানি। তবে সে বিএনপির নাম ব্যবহার করে কোন অপকর্ম করে থাকলে তা সত্যিই প্রতারণা হবে৷পাথালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুস সোবহান বলেন,শরীফুল ইসলাম শিশির পাথালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির কোন পদে নেই।অন্য কোন ইউনিটে তার কোন পদ পদবী আছে কিনা তাও আমার জানা নেই।
বিস্তারিত আরো থাকছে দ্বিতীয় কলামে,,,,,।