সাভার প্রতিনিধি।
ঢাকার সাভারে টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ব্যবসায়ী জামাল হোসেন গোলদার নামের এক ব্যক্তিকে পূর্বপরিকল্পিত ভা‌বে হত্যা করা হয়।সরেজমিনের তথ্যসুত্র থেকে জানা যায়,গত২০২২ইং সালে আওয়ামীলীগ নেতা ও ঠিকাদার ফোরকান হাকিমের কাছে বৈধ গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে ২লক্ষ টাকা দেন ব্যবসায়ী জামাল হোসেন গোলদার।তবে বিগত এক বছর পার হলেও বৈধ গ্যাস সংযোগ লাইন বাড়িতে না আসার কারনে ব্যাবসায়ী জামাল হোসেন গোলদার ফোরকান হাকিমের নিকট ২লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিলে কৌশলে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানা যায়।তবে এখানেই দুষ্কৃতিকারীরা থেমে যায়নি হামলা চালিয়েছে মামলার বাদী ইমরান হো‌সেন গোলদারের বসত বাড়ি,দোকানপাট ও বিভিন্ন স্থাপনায়। প্রতিবাদ করলে তার পরিবারের উপর নেমে আসে বিভিন্ন হয়রানি।শুধু তাই নয় মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে ভুক্ত‌ভোগী পরিবারকে।আলোচিত ব্যাবসায়ী জামাল হোসেন গোলদারের হত্যাকারীদের চক্রান্ত থেকে বাঁচতে এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য প্রশাসনসহ বি‌ভিন্ন দপ্ত‌রে আবেদন করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে।এদিকে মঙ্গলবার(২৪শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং)দুপু‌রে সাভার উপ‌জেলা পরিষদ চত্ত‌রে মানববন্ধনের আয়োজন করে ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসী।মানববন্ধনের আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দেন নিহত জামাল হোসেন গোলদারের আপন ছোট ভাই ভুক্তভোগী ইমরান হোসেন গোলদার।এতেই থেমে নেই চক্রটি।মামলা তুলে নিতে আসামীরা বিভিন্ন ভাবে বাদীকে হয়রানি করছে।এছাড়া ব্যবসায়ী জামাল হোসেন গোলদারের হত্যাকাণ্ডের দায়ে তিনজনকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন বিজ্ঞ আদালত।তারা হলেন-সাভার দক্ষিণ রাজাসন ঘাসমহল এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলে ফোরকান হাকিম (৪৮),লোকমান হাকিম(৫১)ও গোফরান হাকিম(৪৫)।এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগী নিহত পরিবারের উপর হামলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর ঘটনা ঘটেছে।ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ-ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হান হামিদ,সাভার দক্ষিণ রাজাসন ঘাসমহল এলাকার সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মো:শাহজাহান(৪৩),একই এলাকার মো: আরশেদের স্ত্রী মোছা:মোর্শেদা বেগম(৪৬),দিলু মিয়ার ছেলে মো: ডালিম মিয়া(২৮)ও শাহজাহান(৩২),মৃত ছামির আলী আব্দুল গনি(৪৮),মৃত আব্দুল আলীর ছেলে রহম ওরফে রহমত আলী,মোঃ শাকিল আহমেদ স্ত্রী রুম্মান শারমিন(৩০),ও শাকিল আহমেদ(৩৫)বিভিন্ন সময় হামলা ও ভাঙচুরের সাথে জড়িত।এ ঘটনায় তাদের আসামি করে আদালতের মাধ্যমে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।আসামীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি থেকে বাঁচতে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।তার একটি পত্র প্রমাণসহ গণমাধ্যম কর্মীদেরও পাঠানো হয়েছে।অভিযোগ পত্রের তথ্য অনুসারে,আসামীরা তিতাস গ্যাসের অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগকারী দলের মাফিয়া চক্রের সদস্য ও কিশোরগ্যাং এর অর্থদাতা।নিহত ব্যবসায়ী জামাল হোসেন গোলদারকে সাভার আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার বৈধ-অবৈধ গ্যাস সংযোগ লাইন করে দিতে পারবে বলে জানায়। সেজন্য নিজ বাড়িতে বৈধ গ্যাস সংযোগ লাইন নেওয়ার জন্য ২০২২ইং সালের অক্টোবরে আসামীদের ২ লক্ষ টাকা দেয়। এই লাইনে ২/৩ মাসের মধ্যে গ্যাস সংযোগ হবে বলে জানায় আসামীরা।কিন্তু নির্ধারিত সময়ে গ্যাস সংযোগ না দেওয়ায় তাদের তাগিদ দেয়।কিন্তু আসামীরা দীর্ঘদিন পরেও গ্যাস সংযোগ না দেওয়ায় নিহত ব্যাবসায়ী জামাল হোসেন গোলদার তাদের কাছে টাকা ফেরত চায়।তবে তারা টাকা ফেরত না দিয়ে পরিবারের লোকজনদের উপর একের পর এক মিথ্যে মামলা সহ হয়রানি করতে থাকে।পরে গত বছর ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ইং ব্যাবসায়ী জামাল হোসেন গোলদার’কে কৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হাতুড়ি ও দেশিও লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে জামাল হোসেন গোলদার’কে নির্মম ভাবে হত্যা করে আসামীরা।এদিকে এ ঘটনায় জেল হাজতে থাকা আসামিদের রিমান্ডে আনে পুলিশ।তবে মামলা প্রত্যাহারের জন্য নিহত জামাল হোসেন গোলদার ও তার পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিতে থাকে মামলার এজাহারের অভিযুক্তরা।এছাড়াও বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।এদিকে মামলা প্রত্যাহার না করায় উল্টো নিহতের ছেলেকে ছিনতাইকারী বলে মারধর করে পুলিশে দেয় ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হান হামিদসহ অন্যরা।তবে অভিযোগ পত্রে বিভিন্ন সময় তুচ্ছ ঘটনায় পরিবারকে হেনস্থার কথা উল্লেখ করা হয়।অভিযোগে নিহতের ভাই ইমরান হোসেন গোলদার সাংবাদিকদের বলেন,বিবাদীদের কথামতো মামলা প্রত্যাহার না করায় আসামীদের ষড়যন্ত্রে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।এছাড়াও নিহত জামাল হোসেন গোলদারের ছেলে রিয়াজুল ইসলামকে(১৭)গত বছরের নভেম্বর মাসে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের পূর্ব পাশে সুরুচি হোটেলের সামনে একা পেয়ে রায়হান, ফোরকান,আনোয়ার,ইমরানসহ ৮/১০ জন সন্ত্রাসী মারধরসহ হত্যার চেষ্টা করে,পরে আসেপাশে মানুষের ভির হওয়াতে আসামীরা,তাকে কৌশলে ছিনতাইকারী বানিয়ে সাভার মডেল থানায় সোপর্দ করে।পরে বিষয়টি জানতে পেরে ছাত্রলীগ নেতা রায়হান হামিদসহ ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। পরিবারের পক্ষ থেকে দায়েরকৃত হত্যা মামলা এবং হত্যার চেষ্টা মামলা ভিন্ন খাতে নিতে উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন প্রাপ্ত প্রধান আসামী ফোরকান হাকিম বাদী হয়ে উল্টো পরিবারের সদস্যদের নামে মামলা দায়ের করেন।বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফোরকান হাকিমের দায়েরকৃত সেই মামলাটি খারিস করে দেন বিজ্ঞ আদালত।এদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাভার পৌর যুবদলের ৮নং ওয়ার্ডের ৪নং সহ-সভাপতি হওয়া সত্ত্বেও উস্কে দিয়ে আমাকে যুবলীগ কর্মী বা নেতা বলে প্রচার করে এবং পূর্ব শত্রুতার জের হিসেবে সাভারের দক্ষিণ রাজাসন এলাকার সাইনবোর্ডের মোড়ে অবস্থিত দুই তলা বিশিষ্ট ভবনে গোডাউনের ইট ও গেইট ভেঙে অনুমান ৩৮ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়। ভাঙচুর করে আরও ১২লাক্ষসহ মোট ৫০ লক্ষ ৬০ভহাজার টাকার ক্ষতি করে।এ সময় ভুক্তভোগীদের মামলা তুলে নেওয়ার চাপ প্রয়োগ ও হয়রানির প্রতিবাদে নিহত জামাল গোলদারের স্ত্রী মশিউড়া বেগম,ছেলে রিয়াজুলসহ শতাধিক এলাকাবাসী সাথে নিয়ে মানববন্ধন করেন।